For Advertisement

জল্লাদের জেল জীবনই পারফেক্ট ছিলো মুক্ত বাতাসে জল্লাদকে কেমন জানি বেমানান লাগতো, মুক্ত জল্লাদের চেহারায় অসহায়ত্বের একটা ছাপ ছিলো।

২৭ জুন ২০২৪, ৯:৪৭:১৬

জল্লাদের জেল জীবনই পারফেক্ট ছিলো মুক্ত বাতাসে জল্লাদকে কেমন জানি বেমানান লাগতো, মুক্ত জল্লাদের চেহারায় অসহায়ত্বের একটা ছাপ ছিলো।

জল্লাদের জেল জীবনই পারফেক্ট ছিলো মুক্ত বাতাসে জল্লাদকে কেমন জানি বেমানান লাগতো, মুক্ত জল্লাদের চেহারায় অসহায়ত্বের একটা ছাপ ছিলো।
মুক্ত জীবন জল্লাদের জন্য এতো করুন হবে জানলে হয়ত জল্লাদ কখনই মুক্ত হতে চাইতেননা।জল্লাদের জল্লাদ পরবর্তী জীবন আর জল্লাদ থাকাকালীন জীবনে কতো যে পার্থক্য তা কেউ অনুমান করতে পারবেননা।
জল্লাদ শাহজাহানের জল্লাদ থাকাকালীন জীবন কিছুটা দেখার সুযোগ হয়েছে আমার।কি দাপট! বাপরে বাপ জল্লাদ যখন জেলের ভেতরে চলাফেরা করতেন তখন মনে হতো কোনো রাজা বাদশা হাটতেছেন আর তার সাথে পাইক পেয়াদারা রাজাকে গার্ড অফ অনার দিচ্ছেন।সাদা পোশাক আর কোমরে পিতলের বেল্ট সাথে অন্যান্য সহযোগী জল্লাদরাও সেইম পোশাক পরে যখন জেলের মধ্যে চলাফেরা করতেন তখন ছোট বড় হাজতি, কয়েদি থেকে শুরু করে সবাই সালাম সালাম বলে রাস্তা ছেড়ে দিতো।কোথাও বসলে সবাই জড়ো হয়ে কোশল বিনিময় করতো।
আমি যখন বার কাউন্সিল পরীক্ষার ট্রাজেডি মামলায় কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে যাই,এর এক দুই দিন পর ভলিবল খেলতে নামি,প্রতিপক্ষের টিমে বিডিয়ার বিদ্রোহের আসামী কয়েকজন প্রফেশনাল প্লেয়ার ছিলেন।আমি তাদের কয়েটা হিট ডিফেন্স করেছিলাম। সম্ভবত এটা উনি দেখছিলেন, পরের দিন প্রচন্ড গা ব্যাথা করায় আর খেলতে নামিনি,বাইরে বসে খেলা দেখছিলাম, হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন আমার পিঠে হাত দিয়ে বলে, কি আজকে খেলবেন না,ফিরে থাকিয়ে দেখি জল্লাদ শাহজাহান, মুহুর্তে আমার গলা শুকিয়ে গেছে,কি যে ভয় পাইছি আল্লাহ মালুম।
জেলের মধ্যে সবাই এরকম সমীহ করতো উনাকে।অথচ মুক্ত জীবনে কি অমানবিক আর অবহেলার জীবন! এই জীবন উনার আর বেশী দিন সহ্য করতে হয়নি,মুক্ত হয়ে ১ বছরও বাচতে পারলেননা,সারা জীবনের জন্য দুনিয়ার জিন্দেগী থেকে মুক্ত হয়ে গেলেন।শেষ কথায় আসি,যে দিন মুক্ত হই অইদিন বের  হওয়ার সময় উনাকে দেখেছিলাম, আমি বের হতে দেখে শুধু বললেন ভালো থাইকেন।বের হয়ার পর যখন জেলের মূল ফটক থেকে বাইরে আসবো তখন ভাবছি আমাকে নিতে এখানে দুজন মানুষ আসবেন, একজন আমার খালাতো ভাই খছরু ভাইয়া,আরেকজন আরেক খালাতো ভাই জাবির ভাইয়া(ফাজিল সাহেব নানাজির নাতি)।
কিন্তু বেরিয়ে দেখি শুধু খছরু ভাইয়া দাড়িয়ে আছেন।উনার সাথে কোলাকুলি করার পর গাড়ি নিয়ে একটা হোটেলে উঠলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য।গোছল করে ভাইয়াকে জিগাবো জাবির ভাই আসেননি? কিন্তু জিগানোর আগেই উনি একটু সময় নিয়ে বললেন জাবির মারা গেছে।আল্লাহ এই মুহুর্তে আমার মনের অবস্থা কি ছিলো বলে বুঝাতে পারবোনা।ঘটনা গুলু বলার কারণ হচ্ছে,কেমন যেনো কাকতালীয় ভাবে একটার সাথে একটা ঘটনা মিলে যাচ্ছে।গতকাল জল্লাদ শাহজাহান মারা গেছেন,অইদিকে আমার খছরু ভাইয়া হার্ট অ্যাটাক করে হাসপাতালে আছেন।আল্লাহ খছরু ভাইয়াকে যেনো দ্রুত সুস্থতা দান করেন সকলে দোয়া করবেন।জাবির ভাই,জল্লাদ শাহজাহানকে আল্লাহ জান্নাত বাসী করুন।

For Advertisement

Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মন্তব্য