For Advertisement
বগুড়ায় চিরনিদ্রায় মা: দাফন সম্পন্ন করে এসএসসি পরীক্ষা দিলো মেয়ে!
বগুড়ায় চিরনিদ্রায় মা: দাফন সম্পন্ন করে এসএসসি পরীক্ষা দিলো মেয়ে!
মা স্বপ্ন দেখতেন তার মেয়ে পড়াশোনা করে আদর্শ শিক্ষক হবে। মেয়ের সাফল্যে হাসি ফুটবে তার মুখে। কিন্তু মা ভুগছিলেন হৃদরোগে। অবশেষে জীবনযুদ্ধে স্বপ্নময়ী মা পরাজিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মাকে চিরনিদ্রায় রেখে সকল কষ্ট চেপে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে এসেছে তার লড়াকু মেয়ে। বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ঘটেছে বেদনা বিধুর এ ঘটনাটি। মেয়েটির নাম ববিতা খাতুন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ছিল বাংলা প্রথম পত্র বিষয়ের পরীক্ষা। ববিতার কেন্দ্র ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। কেন্দ্রের কক্ষের ভেতর আসনে অন্যান্য সহপাঠীদের সঙ্গে বসে বারবার চোখ মুছতে মুছতে পরীক্ষা দেয় ববিতা।
জানা যায়, ববিতা খাতুন বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের সাতটিকরি গ্রামের দলিলুর রহমানের মেয়ে। সে গোপালনগর ইউএকে উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখার শিক্ষার্থী। তার মা শাহেলা খাতুন গৃহিণী ছিলেন। হৃদরোগে অসুস্থ্য হয়ে গত বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালের দিকে তার মৃত্যু হয়। সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
পরীক্ষার আগে মেয়েকে নিজ হাতে তৈরি করে দেবেন মা, এরপর ভালোবাসা ও দোয়া দিয়ে পরীক্ষার হলে পাঠাবেন। এটাই ছিল হয়তো স্বাভাবিক চিত্র। কিন্তু ববিতার ভাগ্যে তা আর হয়নি। মেয়েকে রেখেই চিরদিনের জন্য চলে গেলেন মা। মায়ের নিকট থেকে দোয়ার পরিবর্তে মাকে কবরে রেখে কেন্দ্রে আসতে হয় তাকে। মমতাময়ী মায়ের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে কেন্দ্রে এসেছে ববিতা।
খবর পেয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মীর্জা ওমর ফারুক খোঁজ খবর নিতে পরীক্ষা কক্ষে যান। তিনি শোকাহত ববিতার পাশে দাঁড়িয়ে সান্তনা দেন। এসময় কক্ষের অন্যনান্য শিক্ষার্থীদের চোখেও পানি চলে আসে। ববিতা ভালোভাবে পরীক্ষা দেওয়া ও বাড়িতে পৌঁছানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেন কেন্দ্র সচিব।
এসএসসি পরীক্ষার্থী ববিতা খাতুন বলে, তার মা তাকে অনেক ভালোবাসতেন। মা চাইতেন যেন সে পড়াশোনা করে অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারে। তাই মায়ের কথা ভেবেই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সে।
কেন্দ্র সচিব ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তফিজ উদ্দিন বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থী ববিতার মা হারানোর বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। তার কক্ষের পর্যবেক্ষকসহ আমি কেন্দ্রে তার খোঁজ খবর রেখেছি। সান্তনা দিয়েছি। সে পরীক্ষার খাতায় মোটামুটি সব প্রশ্নের উত্তর লিখেছে। সেইসঙ্গে মা-হারা ববিতার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।।
For Advertisement
Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য