For Advertisement
বাড়ি ছেড়েছি সেই ২০০৭ সালে, বাড়ি ছাড়ার পর আর বাড়িতে টানা দুই সপ্তাহ থাকা হয় নি।
২৬ জুন ২০২৪, ১০:২১:৩৭
বাড়ি ছেড়েছি সেই ২০০৭ সালে, বাড়ি ছাড়ার পর আর বাড়িতে টানা দুই সপ্তাহ থাকা হয় নি।
বাড়ি ছেড়েছি সেই ২০০৭ সালে, বাড়ি ছাড়ার পর আর বাড়িতে টানা দুই সপ্তাহ থাকা হয় নি। আসি আর যাই গ্রামে থেকেছি আর কত বছর? ১৯ বা ২০ বছর বয়স পর্যন্ত। তারপর থেকেই এই শহরে থাকি।
কত জায়গায় কতভাবেই এই শহরে থাকা হয় বা হয়েছে। ম্যাসে/ব্যারাকে -বাসা,বাড়িতে-অফিসে- রাস্তা রৌদ-বৃষ্টিতে, দিনে-রাতে গোপনে-আত্মগোপনে, গোয়েন্দা:প্রকাশ্যে-গোপনে কত রকমভাবে ডিউটি করেছি। তারুন্য ভরা জীবন নিয়ে এসেছিলাম এখন চুল সাদা হতে শুরু করেছে। এতটা বছর ও সময় এ শহরে চোখের পলকে চলে গেলো, জীবন নিয়ে ভাবতেই পারি নি, অবসর নেই, অবকাশ নেই। জ্ঞান-বুদ্ধি, শিক্ষা-শ্রম, সময় সব আমি শহরকেই দিয়ে গেছি অকাতরে। তবু এ শহর আমার আপন হয়ে উঠে নি। আমি এ শহরের কোন কিছুর প্রতিই কোন টান অনুভব করি না। আমার টান লাগে আমার গ্রামের মাটির ভিটার টিনের চালের গ্রামের ঘরটার প্রতি। আমি অনুভব করি যে, পুকুরের সাঁতার শিখেছিলাম।
যে, মেঠো পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে স্কুল-কলেজে যেতাম সেই পথ আমাকে টানে। বন্ধুদের সাথে চলা আড্ডা আর গল্প, মান-অভিমান নিয়ে। কলা গাছের ভেলা, কচু পাতার ছাতা আমাকে টানে। ফুলের বাগান করা ফুল গাছের চর্চা করা। মাঝে মাঝে ভাবনা হয়, যে বন্ধুগণ গ্রামে থেকে গেছে, ওরাই মনে হয় ভাল আছেন? এ শহরে আসার খুব একটা প্রয়োজন ছিলো না। শহরের বিষন্নতা, হতাশা, একাকিত্ব, মানসিক যন্ত্রনা, মেকী বন্ধুত্ব, অকারণ ব্যস্ততা, অপ্রয়োজনীয় বস্তুর অবাধ ব্যবহার আমাকে পীড়া দেয়।
এ শহরকে যা দিয়েছি, তা আমার জন্মস্থান গ্রামের দেওয়া যেতো। এ শহর নিতান্ত স্বার্থপর শহর। পাষান শহর, অভিনয়ের শহর; অর্থ-বিত্তের জৌলুসে ভরপুর জটিল সমীকরণের এই শহর; মানুষের জীবন যেন, পোকামাকড়ের জীবনের মতো; ১৮ বছর পর্যন্ত যারা আপন হয়ে উঠেছিলো তাঁরাই জীবন শেষে আপন, পাখির কিচির মিচির, সন্ধ্যায় ঝিঁঝি পোকার আওয়াজ, ডাহুক পাখির ডাক, রাতেভর শিয়ালের হুক্কাহুয়া; পূর্নীমা রাতে শুকনা বাঁশঝাড়ের নরবর শব্দ!
১৭ বছরে আমি এই শহরকে আপন করে নিতে পারি নি? এ শহরও আমাকে আপন ভাবে না? শুধু প্রয়োজন ভাবে। আর পার্থক্যঃ তখন মোবাইল ছিল না! এখন মোবাইলে।
For Advertisement
Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
© Cumillar Voice ২০২৪ - Developed by RL IT BD
মন্তব্য