প্রচ্ছদ / জেলার খবর / বিস্তারিত

For Advertisement

লোকটির নাম রবীন্দ্রনাথ দাস বাড়ি দক্ষিন চব্বিশ পরগনা জেলায়, পেশায় একজন মৎস্যজীবী। 

৩০ জুলাই ২০২৪, ৮:১৬:২৮

লোকটির নাম রবীন্দ্রনাথ দাস বাড়ি দক্ষিন চব্বিশ পরগনা জেলায়, পেশায় একজন মৎস্যজীবী। 

লোকটির নাম রবীন্দ্রনাথ দাস বাড়ি দক্ষিন চব্বিশ পরগনা জেলায়, পেশায় একজন মৎস্যজীবী।  ঘটনা টা ঘটে ছিল ২০১৯ সালের জুলাই মাসে হলদিয়া অঞ্চলে বঙ্গোপসাগরে ট্রলার নিয়ে মাছ ধরছিল সে ও তার ১৫ জন সাথী। হটাত প্রচন্ড ঝড় শুরু হয় একসময় ট্রলার উল্টে যায়।
প্রচন্ড ঢেউয়ে একেকজন একেক দিকে রবীন্দ্রনাথও ভেসে যায়। পেশায় জেলে হওয়ায় জলের প্রতি ভয় ছিল তার কম, আর মনে ছিল প্রচন্ড সাহস। তাই গভীর সমুদ্রে ভেসে গেলেও বেঁচে থাকার সাহস হারান নি। ভাসতে থাকেন ভাসতে থাকেন উপরে আকাশ আর নিচে জল রবীন্দ্রনাথ ভাসতে থাকেন। ১ ঘন্টা ২ ঘন্টা করতে করতে ১ দিন থেকে ২ দিন হয়ে যায় রবীন্দ্রনাথ ভাসতে থাকেন।
 রবীন্দ্রনাথের শরীর দুর্বল হয়ে যায় কিন্তু বাঁচার কোন অবলম্বন খুঁজে পায় না। খাবার বলতে কেবল যখন বৃষ্টি নামে তখন সেই বৃষ্টির জল। কারণ সমুদ্রের লোনা জল পান করাও যায় না। তবুও রবীন্দ্রনাথ হার মানে নি ভাসতে থাকে ভাসতে থাকে।
ভাসতে ভাসতে ৫ দিন পার হয়ে যায়। ৫ দিন পর প্রায় ৬০০ কি.মি. ভাসতে ভাসতে বাংলাদেশের কুতুবদিয়ায় এসে পৌছে। তখন বাংলাদেশের জাহাজ ‘এমভি জাওয়াদের’ ক্যাপ্টেন অনেক দূর থেকে তাকে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায়। দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি করে তার দিকে লাইফ জ্যাকেট ছুড়ে মারে। কিন্তু সে ধরতে পারে না। তলিয়ে যায়। কিন্তু জাহাজের ক্যাপ্টেন জাত পাত, ধর্মীয় ভেদাভেদ, সীমানার কাঁটাতার ভুলে তার পিছনে ছুটতে থাকে।  বেশ কিছুক্ষণ পর কিছুটা দূরে আবার তাকে দেখা যায়। ক্যপ্টেন তাৎক্ষনিক জাহাজ সেদিকে ঘুড়িয়ে আবার একটি লাইফ জ্যাকেট ছুড়ে দেয়। এক পর্যায়ে রবীন্দ্রনাথ লাইফ জ্যাকেট ধরতে পারে। এবং ধীরে ধীরে জাহাজের দিকে আসতে থাকে। জাহাজের কাছাকাছি আসলে ক্রেন ফেলে তাকে জাহাজের উপর তোলা হয়।
তাকে জাহাজে তোলার দৃশ্যটি জাহাজের একজন নাবিক ভিডিওতে ধারণ করেন। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায়, রবীন্দ্রনাথকে যখন সফল ভাবে জাহাজে তোলা সম্ভব হয় তখন জাহাজের সকল নাবিকেরা খুশিতে চিৎকার করে উঠে। একজন মানুষের জীবন বাঁচানোর আনন্দে তারা আত্মহারা হয়ে যায়। একজন মৃত্যু মুখের যাত্রীকে জীবন ফিরে দেয়ার যে উত্তেজনা ভিডিওটি দেখলে আপনিও ফিল করতে পারবেন।
ধন্যবাদ এমভি জাওয়াদের ক্যপ্টেনকে। ধন্যবাদ এমভি জাওয়াদে উপস্থিত সকল নাবিককে। একজন মানব সন্তানকে জীবন ফিরিয়ে দিয়ে মানবতার যেই উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তা পৃথিবীবাসীকে আরো বেশি মানবিক হতে শেখাবে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলতে শেখাবে। মানুষ হতে শেখাবে।

For Advertisement

Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মন্তব্য