মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
For Advertisement
সন্ধ্যা ৬টায় হানিফ পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে কিচ্ছু যাত্রী নিয়ে টেকনাফ থেকমিয়া।
২ মে, ২০২৪ ৯:৩০:৩০
সন্ধ্যা ৬টায় হানিফ পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে কিচ্ছু যাত্রী নিয়ে টেকনাফ থেকমিয়া।
সন্ধ্যা ৬টায় হানিফ পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে কিচ্ছু যাত্রী নিয়ে টেকনাফ থেকমিয়া-সেন্টমার্টিন ঘাট থেকে অনেক যাত্রী উঠে, হ্নীলা, হোয়াইকং, উখিয়া এর পর লিঙ্ক রোড, চকরিয়া, চট্টগ্রাম থেকে অনেক যাত্রী উঠানামা করে।
রাত ১টা। চট্টগ্রাম শহর ছাড়িয়ে হু হু করে বাস এগিয়ে চলেছে ঢাকার দিকে। সদ্য বানানো মসৃণ রাস্তা। বেশির ভাগ যাত্রী সিটে বসে ঢুলছে। সামনের সিটে এক বৃদ্ধ তাঁর মেয়েকে নিয়ে বসেছেন। অভিজাত জামাকাপড় পরে আছেন তাঁরা। হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে অন্য সব যাত্রীর দিকে মুখ করে বলতে শুরু করলেন তিনি —‘প্রিয় যাত্রী মহোদয়, আমার পোশাক-আশাক দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে আমি ভিখারি নই।
প্রভু আমাকে অনেক দিয়েছেন, কিন্তু কেড়ে নিয়েছেন আমার স্ত্রী সাবিহাকে। বিধির বিধান কে খণ্ডাতে পেরেছে বলুন? কিছুদিন আগে আমার ফ্যাক্টরিতে আগুন ধরে সব ছারখার হয়ে যায়। এর কিছু দিনের মধ্যে আমার এক্সপোর্ট-ইম্পোর্টের ব্যবসাও লাটে ওঠে। হঠাৎ করে এতটা ক্ষতি আমি সইতে পারিনি।
তাই হয়তো কিছুদিন পরই আমার হার্ট অ্যাটাক করে। যেসব আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব আগে আমার কাছে এসে বসে থাকত, তারা আমার এই দুর্দিনে ধীরে ধীরে দূরে সরে যেতে থাকে। আমি দিন দিন হতাশ হয়ে পড়ি। শরীরও খারাপ হতে থাকে। একসময় ডাক্তার জানায়, আমার জীবনে খুব বেশি দিন অবশিষ্ট নেই। যেকোনো সময় ডাক এসে যেতে পারে। আমার এই যুবতী মেয়ে মিথিলা। দেখতেই পাচ্ছেন আপনারা। সে বেশ সুন্দরী। আমার অবর্তমানে এই মেয়ে নিষ্ঠুর পৃথিবীর বুকে একলা থাকলে তার কী যে দুর্দশা হবে, সে কথা ভেবেই আমি শিউরে উঠি!’
এই কথা কয়েকটি বলতে বলতেই বৃদ্ধের হেঁচকি ওঠা শুরু হয়। মেয়ে মিথিলা বাবাকে ধরে আবার সিটে বসিয়ে দেয়। এমন সময় বাসের পেছনের সিটে বসা এক ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে পড়েন, এবং বাসে বসে থাকা লোকদের সম্বোধন করে বলা শুরু করেন -ভদ্র মহোদয়গণ, আমি পেশায় ব্যবসায়ী। আমার দুই ছেলে। বড় ছেলে ডাক্তার, বিবাহিত। এই আমার ছোট ছেলে। দুই বছর হলো ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে একটি প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি করছে। আমি এর বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছি। প্রভুর অশেষ দয়া, আমি এই বাসে এক সুন্দরী সুশীলা পাত্রীর দেখা পেলাম। আমি ওই বৃদ্ধকে অনুরোধ করছি, তিনি যদি আমার ছোট ছেলেকে উপযুক্ত মনে করেন, তবে আমি তাঁর মেয়েকে নিজের পুত্রবধূ হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি আছি।
আপনাদের সবার সামনে শপথ করছি, ওনার মেয়ে আমার বাড়িতে আমার পুত্রবধূ নয়, মেয়ে হয়েই থাকবে।’ এ পর্যায়ে সুপুরুষ ছোট ছেলে নিজের সিট ছেড়ে দাঁড়িয়ে বলে উঠল, ‘মেয়ে আমার পছন্দ হয়েছে। আমি বিয়েতে রাজি।
এক অনাবিল মুহূর্তের সাক্ষী হতে পেরে সবার ঘুম গেছে ছুটে! বাসের অন্য যাত্রীরা হাততালি দিয়ে এই সম্বন্ধকে স্বীকৃতি জানাল। এরই মধ্যে নাটকীয়ভাবে এক লোক দাঁড়িয়ে বললেন -আপনাদের সবাইকে অনেক অভিনন্দন! বাসেই যদি এই বিয়ের কার্যক্রম হয়ে যায়, তাহলে এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। আমি পেশায় কাজি। বিয়ে পড়াই। আমি এই বিয়েটা পড়াতে পারলে মনে করব জীবনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিয়ে পড়াতে পারলাম।
যাত্রীরা একসঙ্গে বলে উঠল, দারুণ! মারহাবা…সেই উৎসাহপূর্ণ হট্টগোলের মাঝে কাজি সাহেব বিয়ের কাজ শুরু করলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে সব আচার-অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেল। এ পর্যায়ে এক মধ্যবয়স্ক যাত্রী তাঁর সিটে দাঁড়িয়ে বললেন -‘অনেক দিন পর আমি আমার মেয়ে-জামাইয়ের বাড়িতে যাচ্ছি। নাতি-নাতনিরা মিষ্টি পছন্দ করে। তাদের জন্য পাঁচ কেজি রসগোল্লা নিয়েছি। কিন্তু এই আনন্দের মুহূর্তে এই মিষ্টির সদ্ব্যবহার এই বাসেই হোক। পাত্রী তো আমার কন্যাসম।’
বক্তব্য শেষ করে ভদ্রলোক কন্যার বাবার দিকে চেয়ে তাঁর অনুমতির অপেক্ষা করতে লাগলেন। মেয়ের বাবা ড্রাইভারের উদ্দেশে বলেন, ‘ড্রাইভার সাহেব, পাঁচ মিনিটের জন্য গাড়ি থামান দয়া করে। সবাই আগে মুখ মিষ্টি করুন। তারপর আমরা আবার যাত্রা শুরু করব ঢাকার দিকে।’
ঠিক আছে স্যার’ বলে ড্রাইভার বাস থামিয়ে দিলেন। আনন্দে উদ্বেলিত মেয়ের বাবার নির্দেশে সেই মধ্যবয়সী ভদ্রলোক একে একে বাসযাত্রীদের মুখে রসগোল্লা পুরে দিলেন।
ড্রাইভার আর কন্ডাক্টর যখন চোখ মেলে তাকাল তখন ভোর ৫টা। নববিবাহিত বর-বউ, দুই পিতা, কাজি আর মিষ্টি বিতরক বাদে বাসে সবাই আছে। তবে হ্যাঁ, কারোরই মানিব্যাগ, হাতঘড়ি, গলার সোনার চেইন, হাতের বালা-চুড়ি, স্যুটকেস কোনো কিছুই আর জায়গা মতো নেই!!
>>সতর্কীকরণ : অপরিচিত কারো থেকে বাসে কেউ কিছু খাবেন না।
Bangladesh Police.
Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
For Advertisement
সম্পাদক : কাজী মোঃ সাইফুল ইসলাম
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : জাগুরঝুলি বিশ্ব রোড, আদর্শ সদর, কুমিল্লা ৩৫০০.
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক : কাজী ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : জাগুরঝুলি বিশ্ব রোড, আদর্শ সদর, কুমিল্লা ৩৫০০.
+880 1710-818277
+880 0161812800
ইমেইল : cumillavoice20@gmail.com
+880 0161812800
ইমেইল : cumillavoice20@gmail.com
Developed by RL IT BD
মন্তব্য