For Advertisement
২ মে ২০২৪, ৭:৫৪:০০
আল্লাহ ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেয় না কথাটা আমি আমার প্রাক্তন স্বামীকে দেখে বুঝতে পারছি।
আল্লাহ ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেয় না কথাটা আমি আমার প্রাক্তন স্বামীকে দেখে বুঝতে পারছি।
পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় আমাদের, বিয়ের আগে আমি দুই দিন ওনার সাথে কথা বলে ছিলাম সে বলে ছিলো তাঁর নাকি আমাকে খুব পছন্দ হয়েছে তাই দেরি না করে বিয়েটা তাড়াতাড়ি করে নিতে চায়। আমার পরিবারের সবাই রাজি ছেলে ভালো পরিবার ভালো এমন ছেলেকে কি হাত ছাড়া করা যায়। দুই পরিবারের সহমতে বিয়ে হয়ে যায় চার দিনের মধ্যে।
শশুর বাড়ী যাওয়ার পরে সবাই অনেক আদর যত্ন করে। খুশি ছিলাম স্বামী কে নিয়ে। একদিন শাশুড়ি কথায় কথায় বলে দিল ওনার ছেলে নাকি আগে একটা মেয়ে কে পছন্দ করত। ও মেয়ে ভালো না দেখে বিয়ে দেয় নাই ছেলের সাথে।
বিয়ের একমাস খুব সুন্দরই কাটল। একদিন বিকালে আমি ছাদে বসে আছি আমার স্বামী আমার কাছে এসে বলল তোমার সঙ্গে আমি আর থাকব না আমি ভাবলাম হয়তো মজা করছে। আমি শুধু হাসি দিলাম ওনি কিছু না বলে নিচে চলে গেল। আমিও ওনার সাথে নিচে চলে এলাম। ওনি আমার ফোন নিয়ে আমার বাবার কাছে কল দিল বলল আপনার মেয়েকে এসে নিয়ে যান এমন চরিত্রহীন মেয়েকে আমি আমার বাসায় রাখতে পারব না এ বলে ফোন কেটে দেয়। আমি কিছু জিজ্ঞেস করলে কিছু বলল না।
আমার মা বাবা বাসায় থেকে মানুষজন নিয়ে এসেছে কেনো রাখবে না আমাকে আমি কি করেছি। আমার স্বামী একটা ছবি সবাইকে দেখা বলে ও এ ছেলের সঙ্গে রিলেশন আছে। যে ছেলের ছবিটা দেখাইছে এটা আমি আমার স্বামী কে বিয়ের পর দেখাইছিলাম এটা আমার ছোট বেলার ফ্রেন্ড এক সাথে পড়াশোনা করেছি ওর সাথে আমার সম্পর্ক ভাই-বোনের মতো। আর ওকে নিয়ে আমার স্বামী আমাকে যাতা অপবাদ দিলো।
আমি চুপ করেছিলাম চিৎকার করে বলতে মনে চেয়েছিলো আমি কিছু করি নাই এসব মিথ্যা কিন্তু বলতে পারছিলাম না বাসার কেউ কথাটা বিশ্বাস করল না । আমার স্বামী বিচার বসাইব আমার নামে আগে থেকে মানুষ বলে রাখছে আমাকে এ বিচার করে তালাক দিয়ে দিবে আমি কিছু জানতাম না।
আমি ঘর মুছতাছিলাম এমন সময় ওনি রুমে এসে আমার হাতে মধ্যে পা দিয়ে বলে আজ তোদের বাসার মানুষ নিতে আসবে চলে যাবি কোনো প্রশ্ন করবি না।
বিকালে ওনি রুমে ছিলো সন্ধ্যায় বিচার আমার সামনে এসে ওনি আমার হাত ধরে বলল। আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসতাম ছোট বেলায় থেকে। আমি যখন ওকে বিয়ে করতে চেয়েছি তখন আমার কোনো কাজ ছিলো না তাই ওর বাসায় থেকে রাজি হয় নাই। ওরে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয় কিন্তু আমি ওর সাথে যোগাযোগ রাখছিলাম এতো বছর এখন ও আমার কাছে ফিরে আসতে চায় বাসায় ওর কথা বলল কখনও রাজি হবে না।
বাসায় তোমার সাথে আমার জোর করে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে এখন আমি তোমার সাথে থাকতে পারব না আমি যাকে ভালোবাসি তাকে বিয়ে করে বিদেশে আমার কাছে নিয়ে যাব এখন তুমি যদি এখানে থাকো তাহলে সারাজীবন এ বাসায় কাজের মেয়ের মতো থাকতে হবে। আমি আর দেশে আসব না তাই বাসায় থেকে নিতে আসছে চলে যাবে ।
বাসায় গিয়ে পড়শোনা শুরু করবে এ বলে চলে গেলো, সন্ধ্যায় বিচার করে নানা ধরনের অপবাদ দিয়ে এ বাসায় থেকে বের করে দিলো। দুই দিন পরে ডিভোর্স হয়ে গেলো কাবিননামার পাঁচ লাখ টাকা ছিলো ওটা সম্পন্ন টা দিল। টাকা নেওয়ার সময় আমার স্বামী বলল টাকা টা গুনে নেন বাবা চুপ করে ছিল আমি বাবাকে বলেছিলাম বাবা টাকা টা ভালো করে গুনে নেও। এরা তো ধোঁকাবাজ ওদের টাকা ও সমস্যা আছে ওদের মতো।
বাসায় আশার পর এলাকার মানুষ যাতা বলছে আমাকে নিয়ে। ডিভোর্স এর পর একটা মেয়ের দোষ না থাকলেও মেয়েটা দোষী হয়। আমি নামাজে পড়তে দাঁড়ালে চার ঘন্টা তিন ঘন্টা চলে যেতে জায়নামাজে বসে শুধু কান্না করতাম আল্লাহ আমি কি ভুল করছি আমাকে কেনো এতো কষ্ট দিলে। আমি সবসময় বলতাম আল্লাহ আমার এ কষ্ট অপমান সব মুছে দেও।
মাঝে মাঝে দুম বন্ধ হয়ে আসতো মনে চাইতো মরে যাই। যে ফ্রেন্ডার সাথে অপবাদ দিয়েছিল ঐ ফ্রেন্ডরা বিদেশ চলে গেলো সবাই বলতে থাকলে এ মেয়েকে এখন কে বিয়ে করবে এ মেয়ের এখন কি হবে। আবার কলেজে ভর্তি হলাম আগের মতো হয়তো চলতে পারব না কিন্তু চেষ্টা করলাম।
ইন্টার পাশ করার পরে বাবার এক ফ্রেন্ডের রিলেটিভের এক টা ছেলে নাকি আমাকে দেখে পছন্দ করছে আমাকে বিয়ে করতে চায় ছেলে একজন চেয়ারম্যান কিন্তু ছেলে জেলার বাইরে ছেলের বিয়ে হয় নাই এখন আমার মতো একটা ডিভোর্সি মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। ওনাদের নাকি আমাকে নিয়ে কোনো সমস্যা নাই । আমি এবার ও কিছু বলি নাই শুধু বলেছিলাম বাবা এ ছেলের তো আবার ভালোবাসার মানুষ নাই একটু খোঁজ নিয়ে দেখো এ ছেলেকে কে জেনো জোর করে বিয়ে না দেয়।
বিয়ে হওয়ার পর আমার স্বামী রাকিব আমাকে পড়াশোনা করিয়েছে আমাকে বলছে আমি চাই আমার বউ একজন মেজিস্ট্রেট হোক।
হ্যাঁ আজ আমি আমার স্বামীর সপ্ন পূরন করছি আজ আমি জুডিয়াল মেজিস্ট্রেট। সবটা আমার ওনার জন্য হয়েছে। আমার দুই ছেলে একটা মেয়ে আছে। কিছু দিন আগে শুনলাম আমার প্রাক্তন স্বামী যাকে বিয়ে করেছিল সে মেয়ে নাকি তার সব টাকা পয়সা নিয়ে মেয়ের আগের স্বামীর কাছে চলে গেছে । এখন তার অবস্থা খুব খারাপ। তার পরিবারের মানুষ আমার পরিবারকে অনেক খারাপ খারাপ কথা বলছে। এখন এ কথা গুলো তাদের কাছে ফিরিয়ে এসেছে। তার বোন আমাকে চরিত্রহীন কলঙ্কি মেয়ে এসব বলছে সে বোনের মেয়েকেও নাকি শশুর বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে ।
এটা হয়তো নিয়তি আমরা মানুষের সাথে যা করব ঠিক তাও আমরা ফিরত পাবো।
মানুষের জীবন টা আয়নার মতো যা আমরা আয়নায় দেখাবো আয়নাও আমাদের তাই দেখাবে এটাই নিয়তি।
For Advertisement
Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
© Cumillar Voice ২০২৪ - Developed by RL IT BD
মন্তব্য