প্রচ্ছদ / জাতীয় / বিস্তারিত

For Advertisement

বীর মুক্তিযোদ্ধা আজম খান, যাকে শুরু থেকে এখনও সর্বস্তরের সংগীতমুখো মানুষ বিনম্র চিত্তে ‘পপগুরু’ বলে মানেন, ‘পপসম্রাট’ বলে দাবি করেন দ্যর্থহীন কণ্ঠে। (২৮ ফেব্রুয়ারি) সেই আকাশছুঁই জনপ্রিয়তা পাওয়া নির্লোভ মানুষটির জন্মদিন।

২৯ মার্চ ২০২৪, ১:৩৯:০১

বীর মুক্তিযোদ্ধা আজম খান, যাকে শুরু থেকে এখনও সর্বস্তরের সংগীতমুখো মানুষ বিনম্র চিত্তে ‘পপগুরু’ বলে মানেন, ‘পপসম্রাট’ বলে দাবি করেন দ্যর্থহীন কণ্ঠে। (২৮ ফেব্রুয়ারি) সেই আকাশছুঁই জনপ্রিয়তা পাওয়া নির্লোভ মানুষটির জন্মদিন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আজম খান, যাকে শুরু থেকে এখনও সর্বস্তরের সংগীতমুখো মানুষ বিনম্র চিত্তে ‘পপগুরু’ বলে মানেন, ‘পপসম্রাট’ বলে দাবি করেন দ্যর্থহীন কণ্ঠে। (২৮ ফেব্রুয়ারি) সেই আকাশছুঁই জনপ্রিয়তা পাওয়া নির্লোভ মানুষটির জন্মদিন !
১৯৫০ সালের এই দিনে ঢাকার আজিমপুর কলোনির ১০নং সরকারি কোয়ার্টারে জন্ম নেন আজম খান। তার পুরো নাম মাহবুবুল হক খান। বাবা আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও মা জোবেদা খাতুন। তার শৈশবের পাঁচ বছর কাটে আজিমপুর কলোনিতে। তারা ৪ ভাই ও এক বোন ছিলেন। ১৯৫৫ সালে তিনি প্রথমে আজিমপুরের ঢাকেশ্বরী স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে তার বাবা কমলাপুরে বাড়ি বানালে সেখানে চলে যান পরিবারসহ।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময়ে আজম খান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তখন তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসংগীত প্রচার করেন। ১৯৭০ সালে টিএন্ডটি কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন তিনি। ১৯৭১ সালে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন আজম খান। কুমিল্লার সালদায় প্রথম সরাসরি যুদ্ধ করেন। আজম খান ছিলেন দুই নম্বর সেক্টরের একটি সেকশনের ইনচার্জ। তিনি সেকশন কমান্ডার হিসেবে ঢাকা ও এর আশপাশে বেশ কয়েকটি গেরিলা আক্রমণে অংশ নেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর তার ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’ দেশব্যাপী সংগীত জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৯৭২ সালে বন্ধু নিলু আর মনসুরকে গিটারে, সাদেককে ড্রামে আর নিজেকে প্রধান ভোকাল করে অনুষ্ঠান শুরু করেন। ওই বছরই তার ‘এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ আর ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি বিটিভিতে প্রচার হয়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। পরবর্তীতে বিটিভিতে ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’ গান গেয়ে হইচই ফেলে দেন আজম খান। তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- ‘আমি যারে চাইরে’, ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’, ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘একসিডেন্ট’, ‘অনামিকা’, ‘অভিমানী’, ‘আসি আসি বলে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘পাপড়ি’, ‘বাধা দিও না’, ‘যে মেয়ে চোখে দেখে না’ ইত্যাদি।
১৯৮১ সালের ১৪ জানুয়ারি সাহেদা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় আজম খানের। সহধর্মিণী মারা যাওয়ার পর থেকে একাকী জীবন কাটান এ কিংবদন্তি। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক। বড় মেয়ে ইমা খান, মেজো ছেলে হৃদয় খান ও ছোট মেয়ে অরণী খান। ১৯৮২ সালে ‌‘এক যুগ’ নামে তার প্রথম ক্যাসেট বের হয়। এরপর তার বেশ কিছু ক্যাসেট ও সিডি বাজারজাত হয়। তার প্রথম সিডি বের হয় ১৯৯৯ সালের ৩ মে ডিস্কো রেকর্ডিংয়ের প্রযোজনায়।
গানের বাইরেও দেশের মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি আলোচিত কাজও করেছেন আজম খান। ১৯৮৬ সালে ‘কালা বাউল’ নামে হিরামনের একটি নাটকে এবং ২০০৩ সালে শাহীন-সুমন পরিচালিত ‘গডফাদার’ চলচ্চিত্রের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। ২০০৩ সালে ক্রাউন এনার্জি ড্রিংকসের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রথম মডেল হন। পরবর্তীতে বেশ কিছু বিজ্ঞাপনে দেখা যায় তাকে। সর্বশেষ ২০১০ সালে কোবরা ড্রিংকসের বিজ্ঞাপনেও মডেল হন।
২০১০ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হন। ২০১১ সালের ৫ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই পপসম্রাট। তাকে সমাহিত করা হয় মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে।
স্মরণে শ্রদ্ধায় উপগুরু আজম খান!
জন্মদিনে শুভেচ্ছা আপনাকে

For Advertisement

Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মন্তব্য