লালমনিরহাটের সাংবাদিকদের সাথে কথা রাখলেন না ডিসি, শেরপুরের নকলার ইউএনও, এ্যাসিল্যান্ড।

২৪ মার্চ ২০২৪, ২:৫৯:১৭

লালমনিরহাটের সাংবাদিকদের সাথে কথা রাখলেন না ডিসি, শেরপুরের নকলার ইউএনও, এ্যাসিল্যান্ড।

কান্ডে সাংবাদিক রানার ৭ মাসের দন্ডের শোক কাটতে না কাটতেই গত দুদিন আগে লালমনিরহাটের এ্যাসিল্যান্ড আরেক ঘটনার জন্ম দিলেন।

সেখানকার এ্যাসিল্যান্ড একাই ৫ সাংবাদিককে অফিসে আটকিয়ে জেলে ঢুকানোর ভয় দেখিয়ে হেনস্তা, লাঞ্ছিত, ক্ষমতার অপব্যবহার করে আলোচনায় উঠে এসেছেন এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার।

ইতিমধ্যে লালমনিরহাটের বিচার না পাওয়া সাংবাদিকরা ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসককে ঐ অথর্ব এ্যাসিল্যান্ডকে কর্মস্থলে যুক্ত না করতে দৃষ্টি আকর্ষন করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সেখানকার সহকর্মী সাংবাদিকদেরও সহায়তা চেয়েছেন।

তারা এ্যাসিল্যান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ইতিমধ্যে অবস্থান কর্মসূচী সহ নানামুখী প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন।

সাংবাদিকদের অভিযোগ ছিলো, ভুমি সংক্রান্ত মামলার শুনানি কাজে দীর্ঘদিন ধরেই এ্যাসিল্যান্ডের পরিবর্তে তার অফিস কক্ষে সহকারীরা শুনানি করে আসছিলেন। এতে ভুক্তভোগী ভুমি মালিকরা নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আসছিলেন। ঘটনার দিন সরেজমিনে গিয়ে সত্যতা পান যে এ্যাসিল্যান্ড নেই অথচ শুনানি চলছে….

তার মানে, এ্যাসিল্যান্ড একজন ম্যাজিষ্ট্রেট অর্থ্যাৎ বিচারক। আর সেই বিচারকের কক্ষে তার কাজ পেশকাররা কি কখনো করতে পারেন??? পারারও কথা নহে এবং এটি আইনসিদ্ধ নহে।

সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল অফিসে গেলে সহকারীরা সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্য আচরণ শুরু করে মোবাইল ফোনে এ্যাসিল্যান্ডকে ডাকলে তিনি কিছুক্ষণ পরে তিনি অফিসে।

এসে ঐ ৫ সাংবাদিকের সাথে অশোভন আচরণ শুরু করেন এবং তাদেরকে শেরপুরের মত ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয় দেখিয়ে অফিসের একটি রুমে আটকে রাখেন। ঐ ৫জন কিন্তু জেলার পরিচিত সাংবাদিক এবং প্রথম সারির জাতীয় পত্রিকা ও টেলিভিশনের সাংবাদিকও বটে।

আটকের খবর পেয়ে জেলার অপরাপর সাংবাদিক, প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে এলে রাশি ভালো ঘন্টাখানেক পর বন্দীশালা থেকে ঐ ৫ সাংবাদিক মুক্তি পান এবং সকলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাৎক্ষণিক তারা প্রতিবাদ হিসেবে সড়কে অবস্থান করেন।

ঘন্টাব্যাপী কর্মসূচী চলার পর জেলা প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা ছুটে গিয়ে এ্যাসিল্যান্ডের বিচারের আশ্বাস দিয়ে অবস্থান কর্মসূচী গুছিয়ে দিয়ে ঐদিন ডিসি মহোদয় এ্যাসিল্যান্ডকে ঠাকুরগাঁওয়ে বদলী করেন।

এখন প্রশ্ন হলো: আপনি জনাব মোহাম্মদ উল্ল্যাহ, ডিসি সাহেব ঘটনা জেনে শুনে তার স্টাফ এ্যাসিল্যান্ডকে বাঁচাতে ঠাকুরগাঁওয়ে বদলী করেছেন, কিন্তু সাংবাদিকদের সাথে করা অশোভন আচরণ, সম্মানহানি, লাঞ্ছিতের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিলেন। চাউর আছে আপনি নাকি মোটা অংকের বান্ডিল পকেটে গুজে তাকে রিলিজ দিয়ে দিলেন? প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা হিসেবে এতটুকু দায়বদ্ধতা রাষ্ট্র কি আপনাকে দেয়নি।

ধরুন, এ্যাসিল্যান্ড বা তার সহকারীরা যেরুপ কাজগুলো সাংবাদিকদের সাথে করেছেন তদ্রুপ কাজ যদি ঐ সাংবাদিকরা তার ষ্টাফ বা এ্যাসিল্যান্ডের সাথে করতেন তখন ডিসি সাহেব কী আদেশ দিতেন, উত্তর সহজ সাংবাদিক ৫ জনই ততক্ষণে লাল দালানে থাকতো।

কথা হচ্ছে, আপনি ডিসি সাহেব আপনিতো শুধুমাত্র ঐ এ্যাসিল্যান্ড এবং সহকারীদের নহে; আপনি গোটা লালমনিরহাট জেলার দায়িত্বপূর্ণ ব্যক্তি। কিন্তু আপনার স্টাফ এ্যাসিল্যান্ড এবং তার দোসরদের কোন বিচার।

না করে শুধু মাত্র এ্যাসিল্যান্ড নোমানকে বদলী করে কি পরিচয় দিলে, তার বিরুদ্ধে ৫ সাংবাদিককে আটকে রেখে ক্ষমতার অপব্যবহার, ভয়ভীতি প্রদর্শন,হুমকি এবং রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কেনো বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হলোনা।

আপনিতো নিশ্চয়ই জেনেছেন; আপনার অফিসের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টিএমএ মমিন সাাহেব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অফিস গেটের তালা খুলে ৫ সাংবাদিককে মুক্ত করেন।

আপনি এখবরটি নিশ্চিত হয়ে গত দুই তিনদিনে এ্যাসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কী ব্যবস্থা নিলেন, এই প্রশ্নগুলো শুধু লালমনিরহাটের সাংবাদিকদের নহে এটি গোটা দেশের।

সাংবাদিকদের নিকট হতে বিএমএসএফ-বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম এবং সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি,বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আপনার কাছে, প্রশ্ন জনপ্রশাসন মন্ত্রী,এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকটও রাখলাম।

সাংবাদিকরা আশা করে এমন দুই চারটে বখাটের বিচার হলে দেশের মানুষ স্বস্তি পাবেন,সাংবাদিকরা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবেন। এতে রাষ্ট্রের এবং সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে, বিষয়টি ভেবে দেখবেন; নয়তো এসব ছাপোষা বখাটেপনার বিরুদ্ধে দেশের সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাঠে নামবে।

সাংবাদিক সহযোদ্ধা বন্ধুদের উদ্দেশ্যে: আপনারা রাষ্ট্রের পক্ষে, সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গায় থেকে, সকল অন্যায়-অনিয়ম-দূর্ণীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকুন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আপনাদের কলম সত্যের পক্ষে চালিয়ে যান- ইনশাল্লাহ সাংবাদিকদের বিজয় আসবেই।

জয়বাংলা।

আহমেদ আবু জাফর, চেয়ারম্যান, ট্রাস্টি বোর্ড ও সভাপতি, বিএমএসএফ, কেন্দ্রীয় কমিটি।

আসাদুজ্জামান সাজু
Niaz Ahomad Shipon S Dilip Roy
Musa Morshed
Khorshed Alom Sagor

Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।