ওরিও বিস্কুট কোম্পানি ২০২০ সালে নরওয়ের স্ভালবার্ডে পারমাণবিক বোমা হামলা প্রতিরোধে সক্ষম একটা কংক্রিটের ভল্ট তৈরি করে।

১ এপ্রিল ২০২৪, ১:৩২:১৩

ওরিও বিস্কুট কোম্পানি ২০২০ সালে নরওয়ের স্ভালবার্ডে পারমাণবিক বোমা হামলা প্রতিরোধে সক্ষম একটা কংক্রিটের ভল্ট তৈরি করে।
সেটায় তারা তাদের বিস্কুট বানানোর রেসিপি এবং বেশ কয়েক টন তৈরি বিস্কুট প্যাকেটে করে সাজিয়ে রেখে দেয়।
এর কিছুদিন আগে থেকে 2018 VP1 নামের এক গ্রহাণু’র পৃথিবীপৃষ্ঠে আছড়ে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছিল। সময়টাও ছিল কোভিড প্যানডেমিকের।
ওরিও র বক্তব্য ছিল, যদি উল্কাপাত বা গ্রহাণু পিন্ড আছড়ে পড়ার কারণে পৃথিবী ধ্বংস হয়েই যায়, তাহলে পোস্ট-এপোক্যালিপ্টিক সময়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন ওরিও বিস্কুট খেতে পারে, চাইলে বানাতেও পারে।
তারা এটার নাম দিয়েছিল Asteroid-Proof ডুমস ডে ভল্ট।
এটা ছিল তাদের মার্কেটিং টিমের একটা পাবলিসিটি স্টান্ট। আদতে পুরো ব্যাপারটাই ছিল তাদের বিজ্ঞাপনের অংশ, শুধুমাত্র কোম্পানির প্রচারের জন্য।
তবে সত্যি ঘটনা হচ্ছে, নরওয়ের স্পিটসবার্জেন দ্বীপপুঞ্জের স্ভালবার্ড নামক স্থানে Crop Diversity মেইনটেইন করার জন্য আসলেই একটা সিকিওর ব্যাকআপ ফ্যাসিলিটি আছে;
যেটায় দুনিয়ার যাবতীয় শস্যবীজের স্যাম্পল রাখা আছে, যার নাম Svalbard Global Seed Vault (Norwegian: Svalbard globale frøhvelv)।
সিড ভল্টের কাজ আমাদের দেশের কোল্ড স্টোরেজের মতনই। তবে অনেক বেশি লং টার্মের জন্য এবং অনেক সফিসটিকেটেড ভাবে জিন ব্যাংকের মাধ্যমে এখানে বীজবৈচিত্র‍্য সংরক্ষণ করা হয়।
বন্যা, খরা, দুর্যোগ, ইক্যুইপমেন্ট ফেইলিওর, অব্যবস্থাপনা, ফান্ডিয়ের অপ্রতুলতা, যুদ্ধ, বিগ্রহ,  স্যাবোটাজ, রোগশোক কিংবা দৈব কোনো দুর্বিপাক – যে কোনো কারণে ওয়ার্ল্ডের ফুড সাপ্লাই সিকিউরিটি ঠিক রাখার নিমিত্তে এটা তৈরি করা হয়।
তিনটা প্রতিষ্ঠান – নরওয়েজিয়ান সরকার, গ্লোবাল ক্রপ ডাইভারসিটি ট্রাস্ট এবং নরডিক জেনেটিক রিসোর্স সেন্টার মিলে একটা ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে এই সিড ভল্ট দেখাশোনা করে।
উন্নত দেশের উন্নত চিন্তাভাবনা। নুহ (আঃ) এর নৌকায় নেয়া জোড়ায় জোড়ায় প্রাণীর ব্যাকআপের মতো।
টাইম ম্যাগাজিনের ২০০৮ এর বেস্ট ইনোভেশন তালিকার ৬ নম্বরে ছিল নরওয়ে সরকারের এই বীজ সংরক্ষণাগার প্রকল্প। ভল্ট তৈরির ৯ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল তারা।
এই সিড ভল্টে যে কেউ বীজ রাখতে পারে, ফ্রি-তে। পরিচালনা খরচ দেখে নরওয়ের সরকার এবং সিড ট্রাস্ট মিলে একত্রে।
এইরকম বীজাধার থাকলে হরিপদ কাপালি’র মতো কাউকে হরি ধানের বীজ সংরক্ষণ করা নিয়ে আর ভাবতেই হতো না।
আর হ্যাঁ, ওরিও’র ওই বিজ্ঞাপন তখন বেস্ট এড এর তকমা পেয়েছিল। বেশ কয়েকটা পুরস্কারও জিতেছিল।

Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।