বরুড়া থানা পুলিশ কর্তৃক ক্লুলেস শরীফ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন; মূলহোতাসহ ৩ জন গ্রেফতার” হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার এবং গ্রেফতারকৃত আসামীগনের স্বীকারোক্তি প্রদান।
৪ এপ্রিল ২০২৪, ৮:০৬:৫২
বরুড়া থানা পুলিশ কর্তৃক ক্লুলেস শরীফ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন; মূলহোতাসহ ৩ জন গ্রেফতার” হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার এবং গ্রেফতারকৃত আসামীগনের স্বীকারোক্তি প্রদান।
গত ২৭/০৩/২০২৪খ্রিঃ তারিখ থানায় সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে বরুড়া থানা পুলিশ সকাল ১১.৩০ ঘটিকার সময় বরুড়া থানাধীন বরুড়া পৌরসভাস্থ শালুকিয়া সাকিনে পৌছে শরীফ হোসেন (৩৫) এর মৃত দেহ তার ঘরে মাটিতে পড়া অবস্থায় পেয়ে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। মৃত শরীফ হোসেন এর মা রৌশন আরা বেগম থানায় এজাহার দায়ের করলে বরুড়া থানার মামলা নং-১৫, তারিখ-২৮/০৩/২০২৪খ্রিঃ, ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়। মামলাটির তদন্তভার এসআই (নিঃ) নাজিম উদ্দিন এর উপর অর্পন করা হয়।
ভিকটিম শরীফ হোসেন (৩৫) এর লাশ পাওয়ার পর হতে পুলিশ সুপার, কুমিল্লা মহোদয়ের সার্বিক দিক নির্দেশনায় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এ,কে,এম এমরানুল হক মারুফ, সদর দক্ষিণ সার্কেল, কুমিল্লার তত্ত্বাবধানে বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ, মোঃ রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী, এসআই (নিঃ) নাজিম উদ্দিনসহ বরুড়া থানা পুলিশের একটি চৌকস টীম তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। নিহতের পরিবার ও এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে হত্যাকান্ডের কোন যোগসূত্র পাওয়া যাচ্ছিল না। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের জন্য বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জসহ টীম বরুড়া বারবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তদন্ত কার্যক্রমের একপর্যায়ে হত্যাকান্ডে জড়িত আসামী ১। আরিফ হোসেন (২২), ২। মোঃ নাছির উদ্দিন (৪৩), ৩। মিসেস খুকী আক্তার (৩৫) দেরকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতার পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামীগণ হত্যাকান্ডের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। ১নং আসামী মৃত শরীফ হোসেন এর ছোট ভাই, ০৩নং আসামী মৃত শরীফ হোসেনের বড় বোন এবং ২নং আসামী ৩নং আসামীর স্বামী।
মৃত শরীফ হোসেন উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করত। সে মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল। এলাকার লোকজন তাকে ভয় পেতো। মৃত শরীফ হোসেন তার মাকে প্রায় সময়ই গালিগালাজ ও মারধর করত। ছোট ভাই আরিফ হোসেনের সাথেও তার ঝগড়াঝাটি ছিল। কিছুদিন আগে আরিফ হোসেন এর একটি অটোরিক্সা শরীফ হোসেন জোরপূর্বক বিক্রি করে। ইহাকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তাছাড়া মৃত শরীফ হোসেন এলাকার লোকজনের বিভিন্ন রকম ক্ষতি করায় ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন তার বড় বোন খুকি আক্তার এর নিকট বিচার প্রার্থী হলে বড় বোন শরীফ হোসেনকে শাসন করার জন্য বিভিন্ন কথাবার্তা বলত। ফলে মৃত শরীফ হোসেন বোনকে শত্রু মনে করত। এমনকি বোনকে বিভিন্ন রকম হুমকি দিতো। মৃত শরীফ হোসেনের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে বড় বোন খুকি আক্তার, বোনের স্বামী মোঃ নাছির উদ্দিন ও ছোট ভাই আরিফ হোসেন তাদের একজন প্রতিবেশীকে নিয়ে পরিকল্পনা করে যে, শরীফ হোসেনকে মারপিট করে পঙ্গু করে ঘরে বসিয়ে খাওয়াইবে।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামীগন গত ২৬/০৩/২০২৪খ্রিঃ তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ ২৭/০৩/২০২৪খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০১.০০ ঘটিকার সময় বরুড়া থানাধীন বরুড়া পৌরসভাস্থ শালুকিয়া সাকিনের শঙ্কু ডাক্তারের পুকুর পাড়ে নির্জনস্থানে শরীফ হোসেনকে একা পেয়ে আসামীদের হাতে থাকা রড, দা ও টর্চ লাইট দিয়ে শরীফ হোসেনের মাথা, হাত, পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত ও ফুলা জখম করে। তারপর শরীফ হোসেনের হাত পা বেধে আসামী নাছির উদ্দিনের বাড়ির উঠানে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর শরীফ হোসেনকে আবারও মারপিট করে। তারপর শরীফ হোসেন দুর্বল হয়ে গেলে আসামীগন হাত পা বাঁধা অবস্থায় শরীফ হোসেনকে তার ঘরে মাটিতে ফেলে আসে। সকাল অনুমান ০৯.৩০ ঘটিকার সময় আসামীরা জানতে পারে শরীফ হোসেন মারা গেছে। সংবাদ পেয়ে আসামীরা শরীফ হোসেনকে দেখতে যায়। হত্যাকান্ডে আসামীদের ব্যবহৃত দা, রড, টর্চ লাইট উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী ১। আরিফ, ২। নাছির এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।