পেয়ারার সুবাস” ~ The Scent Of Sin. দেশের বাইরে থাকার কারণে পেয়ারার সুবাস” থেকে বঞ্চিত ছিলাম।
৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪২:০৩
পেয়ারার সুবাস” ~ The Scent Of Sin.
দেশের বাইরে থাকার কারণে পেয়ারার সুবাস” থেকে বঞ্চিত ছিলাম। একটু দেরিতে হলেও চরকি’র কল্যাণে “পেয়ারার সুবাস” নেয়ার সুযোগ পেলাম।
নুরুল আলম আতিকের সিনেমা পেয়ারার সুবাস”। তাঁর সিনেমা নিয়ে রিভিউ বা লেখার যোগ্যতা কখনো আমার নেই।
চতুর্থ মাত্রা”, “সাইকেলের ডানা”, চিঠি” তাঁর কাজের মধ্যে আমার প্রথম দেখা। নুরুল আলম আতিকের সাথে আছে আমার কাজের এবং আত্মিক বন্ধুত্বের সম্পর্ক।
বন্ধুত্বটা রেখে কাজের সম্পর্কের কথাই বলি। আমরা একসাথে অসাধারন কিছু কাজ করেছি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, “ডুব সাঁতার” “মনে মনে” “চন্দ্রবিন্দু” অদৃশ্য মানব” “ডেঙ্গুর দিনগুলিতে প্রেম” “টু-লেট এবং অন্যান্য। সবই আমার প্রোডাকশন Chaos7 এর প্রযোজনা। বিশেষ করে “চন্দ্রবিন্দু” বাংলাদেশে আজীবন থাকবে একটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স হয়ে। লাইব্রেরী বা আর্কাইভে সংরক্ষণ করে রাখার মত কাজ।
আমার দৃষ্টিতে নূরল আলম আতিক এত মেধাবী একজন নির্মাতা, তার মেধার পরিধি আমার কাছে ভাবনার সীমানার ওপর প্রান্তে। তাঁর কাজ আমাকে সব সময় ভাবায়, উদ্বেলিত করে, মগজে অক্সিজেন সরবরাহের কাজ করে। তাঁর কাজগুলো অসাধারণ কাব্যিক, মনে হয় একজন শিল্পীর রং তুলিতে বিশাল ক্যানভাসে আঁকা জীবনের প্রতিবিম্ব বা প্রতিচ্ছবি।
সিনেমাটি উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত অভিনেতা আহমেদ রুবেলকে। আহমেদ রুবেল, নুরুল আলম আতিক আর আমি, রয়েছে আমাদের এই তিন দুষ্টু ত্রয়ীর অসংখ্য নির্ঘুম রাতের আড্ডার আচ্ছন্নতার রেশ।
এই সিনেমায় যারা অভিনয় করেছেন প্রত্যেকের সাথেই রয়েছে আমার পারস্পারিক সম্পর্ক এবং কাজের অভিজ্ঞতা, শুধুমাত্র নতুন দু’একজন ছাড়া।
তারিক ভাইয়ের কথা কি বলবো তিনি আমার কাছে একজন গুরুতুল্য অভিনেতা। মুন্সি দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা। জয়া সব সময় তার কাজে বিচক্ষণ বুদ্ধিমত্তার স্বাক্ষর রেখেছেন। যারাই এই সিনেমাটি দেখবে পেয়ারা বেগমের সুবাসে সুবাসিত হবে। দিহানের অভিনয় আমার সব সময় ভালো লাগে। শুধু একসাথে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে না, একজন দর্শক হিসাবে বলছি। অসাধারণ একজন জাত অভিনেত্রী দিহান। দেখেছি আর মুগ্ধ হয়েছি, পেয়ারার সুবাসের সাথে তার অভিনয় মায়ার সুবাস ছড়িয়েছে। দিহানের দু একটা দৃশ্য ছাড়া প্রায় সব কটি দৃশ্য শর্মি মালাকে দিয়ে ডাবিং করানো হয়েছে। ডাবিং যথার্থ হলেও পরিচিত কন্ঠ তো তাই কানে লেগেছে।
সুষমা সরকার যথার্থ চরিত্র অনুযায়ী। ভালো লেগেছে।
আর আহমেদ রুবেল আমার সব সময় ঈর্ষণীয় ভালোলাগা একজন অভিনেতা। পর্দায় তার কন্ঠ, তার উপস্থিতি, সবসময় পর্দা কে আলোকিত করে, প্রাণ সঞ্চার করে। এখনো বিশ্বাস করি না তাকে আমরা হারিয়েছি। মনের মধ্যে বিশ্বাসটা ধরে রেখেছি বাংলাদেশের যাব, ফোন আসবে, সেই কন্ঠে আবার শুনবো, স্বাধীন চলে আসেন…,আজকে রাতে আতিক আমি আর আপনি বসবো!
অন্যান্য যারা অভিনয় করেছেন সবাই যথার্থ ভালো অভিনয় করেছেন।
এই সিনেমার সবচেয়ে ভালো লাগা, সুন্দর দিকটা আমার কাছে, একটানা দিনের পর দিন ঝুম বৃষ্টি ঝরছে তো ঝরছে। দৃষ্টিনন্দন এই বৃষ্টি আর ভাসা পানির চিত্রায়ন। তার আগে আমি খুব কম বাংলা সিনেমায় এ ধরনের দৃষ্টিনন্দন বৃষ্টির চিত্রায়ন দেখেছি। এই মুহূর্তে মনে পড়ছে হুমায়ূন আহমেদের শ্রাবণ মেঘের দিনে”র কথা।
গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা, এই সিনেমার মধ্যে আছে…, শক্তিশালী আকর্ষণীয় অদৃশ্য শক্তি, যে কাউকে সর্বাঙ্গে জড়িয়ে ধরে রাখার ক্ষমতা রাখে।
সিনেমাটির প্রযোজনায় Alpha-i। সাধুবাদ জানাই শাহরিয়ার শাকিল এবং রেদওয়ান রনিকে।
ভালোলাগার সিনেমা, ভালোবাসার সিনেমা “পেয়ারার সুবাস”।
পেয়ারার সুবাসে”র পুরো টিমকে সাধুবাদ, যথার্থ সম্মান। সুস্থ ধারার বাংলা সিনেমার জয় হোক।
জয় বাংলা সিনেমা।
স্বাধীন খসরু
মার্চের ৩০/২০চব্বিশ
লন্ডন।
Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।