কারো পায়ের শব্দ পেতেই যুবতী মেয়েটার শরী”র থেকে উঠে লুঙ্গিতে কষে গিট্টু মা”রেন লতিফ ব্যাপারী‌ ।

১ জুন ২০২৪, ৮:১৯:১৮

কারো পায়ের শব্দ পেতেই যুবতী মেয়েটার শরী”র থেকে উঠে লুঙ্গিতে কষে গিট্টু মা”রেন লতিফ ব্যাপারী‌ । কামুক খায়ে”শ মি”টাতে গিয়ে শ”রীর ঘেমে।
পানি টপ টপ করে জমিনে পড়ছে। অর্ধ ছেড়া উড়না দিয়ে মুখ বাঁধা যুবতী মেয়েটা উপর হয়ে পড়ে আছে। এতো রাইতের বেলায় কেডা আবার এই  রাস্তা দিয়া যাইতাছে? এইহানে আর থাকোন যাইবো না। মনে মনে বিড়বিড় করছে মেয়ে লো”ভী লতিফ ব্যাপারী । লাল বর্ণের চোখ দিয়ে অনবরত পানি ফেলছে  মাত্র স”তিত্ব হারা অচেনা মেয়েটা। বর্ষার রাতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি নেমেছে সকাল থেকেই। এখনো থামার নামটি মাত্র নেই। প্রায় ১৬ ঘন্টা যাবত একই ভাবে পড়ে আছে মেয়েটা। এই নির্জন ভাঙ্গা ঘরে কেই বা আসবে? কেই বা জানবে এখানে একটা তাজা প্রান অকালে ঝড়তে বসেছে।  সন্ধ্যার ঘোর নেমেছে আকাশ জুড়ে। এখনো বৃষ্টি পড়ছে মশুল ধারায় । তাকিয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে তার। পিপাসায় ছটফট করতে করতে শেষ ঘুম ঘুমিয়ে যায় মেয়েটা।
হরিপুর গ্রামে কারো চোখে ঘুম নেই। অজানা আশঙ্কায় ভীতু সবাই। এ এক অদ্ভুত ভয় । নারী আর পুরুষ এমনকি স্বামী- স্ত্রী  স”ঙ্গমে জড়ালেই মৃ”ত্যু হচ্ছে তাদের। ১ মাসে পরপর ২১ টা খু”ন হয়েছে ।  পুলিশ তদন্ত করছে দিন রাত। সন্দেহ ভাজন কাউকে দেখলেই ধরে নিয়ে যাচ্ছে তাঁরা।
সন ২০২১ ইং সাল হৃদজা বেশ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। নতুন চাকরি দেরি করলে চলবে না।  হৃদজা হরিপুর সরকারি কলেজে বাংলা প্রফেসর। চাকরিটা হয়েছে শহর থেকে দূরে হরিপুরে।  ভাগ্যিস মায়ের বান্ধবীর বাড়ি এই হরিপুরেই, তাই তেমন অসুবিধায় পড়তে হয়নি তাঁকে। আন্টি বের হলাম আমি।” চশমার গ্লাস পরিষ্কার করে চোখে এটে নিয়ে বেরিয়ে পরে হৃদজা।  নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া বেশ কিছুদিনের ব্যাপার । হৃদজা খেয়াল করেছে সন্ধ্যা হলেই কেমন নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে পুড়ো গ্রামটা। তাছাড়া মোবাইলে নেটওয়ার্কে বেশ সমস্যা। বাড়ি থেকে ল্যাপটপ এনেছিলো ভেবেছিলো ওয়াইফাই লাগিয়ে নিবে। এখানে কারেন্টেরই যেই হাল আবার ওয়াইফাই। ভাবতেই বিরক্ত বোধ করছিলো হৃদজা। ক্লাসে মোবাইল নেওয়া নিষিদ্ধ।
কেমন নিয়ম এটা? ক্লাসে ঢুকার আগে মোবাইল সিকিউরিটির কাছে জমা দিতে হয়। সেদিনও ব্যাতিক্রম হয়নি। খানিক বাদে সিকিউরিটি দৌড়ে এসে হৃদজা কে ডেকে দেয়। মেডাম, হৃদয় নামের কেউ আপনারে মেলা বার কল দিতাছে।
মোবাইল হাতে নিয়ে কলেজে একটা পরিত্যক্ত ঘরে ঢুকে সে। অন্য কেউ দেখলে সমস্যায় পড়তে পারে, এই তোমাকে না বলেছি কলেজে থাকা অবস্থায় কল দিবা না। জানোই তো কলেজে মোবাইল নিয়ে আসা সম্পূর্ণ নিষেধ। (রাগী কন্ঠে) আরে তোমার সাথে এক মূহূর্ত কথা না বলে থাকতে পারিনা যে আমি।
হয়ছে আর আবেগ দেখাতে হবে না । বিয়ে করার নামে নাই যত সব ঢংয়ের আলাপ । ছুটির পর কথা বলবো এখন রাখি। ফোন কেটে দিয়ে একটা স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলে হৃদজা ‌‌। হৃদয় আর হৃদজা সেই কলেজ লাইফ থেকে দুজন দুজনকে ভালোবাসে ভালোবাসার মানুষ কে ছেড়ে কী থাকা যায়? মোবাইল সন্তর্পনে লুকিয়ে রাখে সে। এতক্ষণে খেয়াল করে সে একটা পরিত্যক্ত পুরোনো লাইব্রেরিতে। চারিদিকে ধুলোবালি জমে গেছে। অবাকের বিষয় এখনো কিছু কিছু বই রয়েছে ভাঙা আলমারিতে। হৃদজার ছোট থেকেই বইয়ের প্রতি এক আলাদা মোহ আছে। বেশ আগ্রহ নিয়ে বই গুলো হাতে তুলে নেয়।
মোলাটে ধুলো বালির আস্তরন । হাতের ঝাড়ায় আবছা মুছে দেয়। প্রথমে বই ভাবলেও ভালো মত চাক্ষুষ করতেই দেখে এটা তো একটা ডাইরি। “_বাহ্ আগের দিনের ডাইরির মোলাট এতো সুন্দর।” মনে মনে ভাবছে হৃদজা। ডাইরিটা খুলে দেখবে মনস্থির করে । হাত দিয়ে পুনরায় বার কয়েক ঝাকুনি দিয়ে ধুলোর আস্তরন সরিয়ে দেয়।
মহুয়ার ডাইরি, সূচনা পৃষ্ঠায় এমন নামই লেখা আছে। _বেশ অদ্ভুত তো ! হৃদজার আগ্রহ জেনো দ্বীগুন বাড়ছে। বাবা মায়ের মৃত্যুর পর অনেক কষ্টে এতিম খানায় লেখাপড়া শেষ করে একটা চাকরির জন্য দারে দারে ঘুরছি। পৃথিবীটাকে স্বার্থ পর লাগছে আমার কাছে। কিন্তু সব চিন্তার অবসান ঘটে কিছুদিনের মধ্যেই। শেষ মেষ একটা কলেজের সহকারী পিয়ন পদে চাকরিটা পেয়েই গেলাম। হরিপুর গ্রামের মানুষ জন বেশ ভালোই। কলেজের ছাত্র- ছাত্রীরাও অনেক ভালো।  কলেজের উত্তরের দিকের বাগানটা আমার নজর কেড়েছে। অবসর সময়ে সেখানেই বসে কাটায়।
এতো টুকু পড়ে বুঝতে পারে এটা কোনো মহুয়া নামের মেয়ের পার্সোনাল ডাইরি। তার মানে কলেজের উত্তরে বাগান আছে?” ভাবতে ভাবতে বেশ আগ্রহ নিয়ে উত্তরের জানালা দিয়ে তাকাতেই হৃদজা দেখতে পায় বেশ সুন্দর একটা বাগান। ছুটির পর যাওয়ার মনস্থির করে সেখানে । ‌হঠাৎ হৃদজা ঘরে কারো উপস্থিতি টের পায়।  কেউ হয়তো  আড়াল থেকে দেখছে তাকে। এদিক সেদিক চোখ বুলিয়ে কাউকে দেখতে পায়না হৃদজা। পুনরায় ডাইরিটি খুলে সে পড়তে থাকে। শিতল বাতাস হৃদজার শরীর ছুঁয়ে গেছে।
আমার একটা হাতের বালা আছে, যেটা আমার মায়ের কাছ থেকে পেয়েছি। সেটা সব সময় আমার পার্সোনাল লকারেই রেখে দিতাম। প্রথম পৃষ্ঠা শেষ না হতেই বিকট চিৎকারের শব্দ। কলেজের বাইরে থেকে আসছে। হৃদজা তাড়াতাড়ি ডাইরিটা হাতে নিয়েই বাইরে আসে। একটা মে”য়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। এই কলেজেরই স্টুডেন্ট সে।
ও অজ্ঞান হলো কিভাবে? হৃদজা আগ্রহ নিয়ে সিকিউরিটি বাতেন মিয়া কে জিজ্ঞেস করে।  মেডাম বিজ্ঞান ক্লাসে অঘটন ঘটেছে। একটা ছাত্র খু”ন হয়েছে। সেই লা”শ দেখেই এই মেয়েটা অজ্ঞান হয়ে গেছে।
হৃদজা যেনো আকাশ থেকে পড়ে। কলেজে খু”ন? তাও আবার সেই কলেজের স্টুডেন্টের । দৌড়ে বিজ্ঞান ক্লাসে ঢুকে হৃদজা। বেশ ভীড় লেগেছে লা”শটার চারদিকে। লা”শটার হাতের দিকে তাকিয়েই  থ’ মে”রে যায় হৃদজা। ডাইরি তে উল্লেখ করা হুবহু একই ধরনের বালা ছেলেটার হাতে মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা আছে। এক অজানা আত”ঙ্কে কেঁপে উঠে হৃদজার সারা দেহ, হাতে থাকা ডাইরিটার দিকে বড় বড় করে তাকিয়ে আছে হৃদজা ।
চলবে, মহুয়ার_ডাইরি

Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।