দীর্ঘ দশ বছর প্রবাসে কাটিয়ে যখন কাউ কে না জানিয়ে বাড়িতে আসি সবাই কে সারপ্রাইজ দিবো বলে।

২৭ জুন ২০২৪, ৯:৩০:৫১

দীর্ঘ দশ বছর প্রবাসে কাটিয়ে যখন কাউ কে না জানিয়ে বাড়িতে আসি সবাই কে সারপ্রাইজ দিবো বলে।
বাড়িতে এসে আমি নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে যাই। কারণ আজকে আমার ছোট ভাইয়ের বিয়ে অথচ আমাকে কেউ একবার বলেনি। আমি বাড়িতে আসায় কেউ খুশি হতে পাড়েনি। আমি ভালো ভাবে  বুঝতে পারছিলাম। কারণ তাদের চেহারায় খুশির চেয়ে বিরক্ত ভাব টা বেশি ছিলো। সবার সাথে কোশল বিনিময় করে ঘরে যাই।তখন বাবা আমার পিছন পিছন পিছন আসে। বাবা :কিরে নিলয় হঠাৎ বাড়িতে চলে আসলি যে কোন সমস্যা হইছে। না বাবা সমস্যা হয় নাই তোমাদের দেখতে মন চাইলো তাই চলে আসলাম। বাবা : ওওও তা আবার কখন যাবি।
বাবার কথা শুনে কিছু টা অনেক টা অবাক হলাম এই মাএ বাড়ি আসলে আর এখন জিজ্ঞেস করছে কখন যাবি। একটা মুচকি দিয়ে বললাম) কিছু দিন পর চলে যাবো বাবা, বাবা : ওহ্ এখন না এসে কিছু দিন পর আসতি।এখনো অনেক লেনাদেনা বাকি আছে আমাদের। বাবার কথা শুনে কিছু বললাম না,, তখন মা বললো মা : কিরে বাবা চলে আসলি কেন কোন সমস্যা হইছে না মা সমস্যা হয় নাই। এমনি আসলাম তোমাদের দেখতে।
মা : ওও আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে আর, আজকে আবার রাকিবের বিয়ে তুই যাবি নাহ্ তোর ভাইয়ের সাথে। নাহ্ মা আমি আমি ক্লান্ত,, তাই যাবো নাহ্। আমি আমার মা বাবার কথা শুনে অনেক টা অবাক হলাম। বড় ছেলে বিয়ে করে নাই। তাকে জিজ্ঞেস করে ছোট ভাইয়ের বিয়েতে যাবে কি নাহ্।সবাই ছোট ভাইয়ের সাথে চলে গেলো  শুধু মা ছাড়া। সারা দিনের জার্নি করে আমি অনেক টা ক্লান্ত।তাই কিছু না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি ঘুম ভাঙ্গে মানুষের হইচই শুনে। বুঝতে পারলাম বউ নিয়ে চলে আসছে এর মধ্যে ছোট ভাইয়ের সাথে কথা বা দেখা হয় নাই। ওই ভাবে শুয়ে আছি আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করেনি আমি কিছু খেয়েছি কি না। একটু পর ছোট বোন আসলো।
মোন্তাহা, ভাইয়া কেমন আছো তুমি ভালো  তুই কেমন আচ্ছিস মোন্তাহা : ভালো ভাইয়া তুমি মনে হয় সকাল থেকে কিছু খাওনি আরে তেমন কিছু না খাওয়া হইছে আমার মোন্তাহা : ভাইয়া তুমি মিথ্যা টা ও ভালো ভাবে বলতে পারো নাহ্। তুমি বসো আমি খাবার নিয়ে আসি।
মানুষ বলে মা নাকি মুখ দেখে সন্তানের দুঃখ বোঝে কিন্তু আমার বেলা উল্টো। আমার আম্মুর মনে নাই আমি বাড়িতে আসছি।এতো খন যার সাথে কথা বললাম। সে হলো আমার ছোট বোন। এক মাএ আমার ছোট বোন আমার চেহারা দেখে বলতে পারে আমি কি চাই। তাই তো বুঝতে পারছে আমি কিছু খাই নাই।কিছু খন পর খাবার নিয়ে আসলো মোন্তাহা, ভাইয়া খাবার টা খেয়ে নাও। হুম মোন্তাহা, ভাইয়া একটা কথা বলি? হুম বল কি বলবি। মোন্তাহা, আমার হাতে খাইয়ে দিবো তোমাকে। হুম দে অনেক দিন হলো কারো হাতে খাবার খাই না। তার পর ছোট বোন।খাবার খাইয়ে চলে গেলো।রাতের বেলা সবাই আমার ঘরে আসলো। সাথে ছোট ভাই ও ছিলো আম্মু বললো।
মা, নিলয় কি নিয়ে আসলি আসার সময়। আমাদের একটু দেখা এনে ছিলাম অনেক কিছু। কিন্তু কা কে দিবো বুঝতে পারছি না। তখন বাবা বললো।
বাবা, কা কে দিবি মানে আমরা তোর পরিবার আমাদের কে দিবি। একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললাম। তোমরা আমার পরিবার বাবা, কেনো নাহ্ এমনিম আমি এখন কিছু খুলতে পারবো নাহ্। দুই দিন পড়ে খোলবো।
তারপর সবাই চলে গেলো কি আজব দুনিয়া। আমার থেকে তাদের কাছে জিনিসের দাম টা বেশি। দেখতে দেখতে দুই দিন কেটে গেলো দুই দিন পর
আমরা সবাইকে ভালো রাখতে দিনের পর দিন কষ্ট করি। না খেয়ে থাকি, রাতে ঘুম পড়ি না। ওষুধ হলে সেবা নেই না সেই অসুস্থ শরীর নিয়ে ডিউটি করি।
মাস শেষ হলে  নিজে খালি পকেটে থাকি, বাড়ি সব টাকা পাঠিয়ে দেয়।এই হলো-  প্রতিটা প্রবাসীদের জীবনের বাস্তব গল্প ও কাহিনী।
এর কোন পরিবর্তন কারো জীবনে নাই আর হবে ও না। মা বাবা তার সন্তানের ভালো চায়,,,, সব করে মা বাবা সন্তানের জন্য। তাদের রূণ শোধ করা যাবে না।  সব সময় দোয়া করে মা বাবাই সন্তানের জন্য। মা বাবার কোন দোষ নেই।  তারা যা করে সঠিক ও ভালো টাই করে। তবে ২-১জন ভিন্ন থাকে ও হয়।
আল্লাহর কাছে মন থেকে চাই ও বলি আল্লাহ আপনি তো প্রবাসীর মনের কথা জানেন। আমাদের মাফ করে দিবেন,  সব কিছু উজাড় করে দিয়ে ও পরিবারের আপন হতে পারি না, ভুল গুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই প্রবাসীর কষ্ট বুঝে না যখন প্রবাসী হবে তখন বুঝবে।

Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।