আমি তখন থাকতাম আমার খালার বাড়ী, মা বাবা দুজনই রোড এক্সিডেন্ট এ মারা যাবার পার আমার জায়গা হয় খালার বাড়ীতে।
২ জুলাই ২০২৪, ৮:৪৪:০৬
আমি তখন থাকতাম আমার খালার বাড়ী, মা বাবা দুজনই রোড এক্সিডেন্ট এ মারা যাবার পার আমার জায়গা হয় খালার বাড়ীতে। খালার দুই মেয়ে রিনি আপা আর ঝিনি আপা।
একসাথে ডাকলে খুব ভালো লাগতো শুনতে। রিনিঝিনি। আর ছিলো খালার এক ছেলে নাম খালিদ। খালিদ ভাই আমার থেকে বছর পাঁচকের বড়। আমার যখন আট বছর তখন খালিদ ভাই তেরো বছরের। ঐ তেরো বছরেই খালিদ ভাই ছিলেন অনেক গম্ভীর। আমার ভয় করতো তাকে। বড় হবার সাথে সাথে তার গম্ভীরতা যেন আরো বাড়তে থাকে।
রিনি আপা আর ঝিনি আপা ওরা ছিলো খুব মজার মানুষ। অনেক আদর করতেন আমাকে। খালা খালুও কখনো আমাকে তাদের পরিবারের বোঝা বা বাড়তি কেউ মনে করেন নি। কিন্তু আমি যেন নিজের মনেই নিজেই কুকড়ে থাকতাম। নিজেকে আশ্রিত মনে হত। অনেক কিছু করতে চাইলেই করতাম না।মনে হত এসব আমার জন্য না। এভাবেই দিন যেতে লাগলো৷
রিনি আপা ঝিনি আপার বিয়ে হয়ে গেলো। রিনি আপা থাকেন আমেরিকায়। তার ছোট্ট একটা ছেলেও হয়েছে। আর ঝিনি আপা থাকেন চট্টগ্রামে। দু একমাস পর পর বেরাতে আসেন। আমি এখন অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আর খালিদ ভাই পড়াশোনা শেষ করে সবে মাত্র, একটা চাকরীতে ঢুকেছে। উনি তার ছোট বেলার থেকে আরো গম্ভীর হয়েছেন।
প্রয়োজনের বাইরে একটা কথাও উনি বলতে পারেন না। আমার মনে হয় উনি আমাকে সহ্যও করতে পারেন না। থাক তাতে আমার কি?? আমি হলাম আশ্রিত আমার এত কথা মনে হলে তো চলবেনা। খালা একবার উনাকে বলেছিলেন অফিস যাওয়ার পথে আমাকে কলেজ নামিয়ে দিতে।
উনি এমন ভাবে খালার দিকে তাকালেন যে খালা নিজেই ভয় পেয়ে গেলেন। আমি কোন রকমে বললাম লাগবেনা। আমি আমার মতই আসা যাওয়া করতাম। এরমধ্যেই একদিন ঝিনি আপা এলেন উনার দেওর কে সাথে নিয়ে। ঝিনি আপা থাকবেন মাস খানিক । আর উনার দেওরের কি একটা অফিসিয়াল কাজ পড়ছে তাই দু তিন থাকা লাগবে।
উনার দেওর অনেক গল্প করতে পারেন। একদিন বিকেলে ছাদের গাছগুলো তে পানি দিচ্ছি লাম। তখন ঝিনি আপার দেওর এলেন। টুকটাক কথা বলছিলেন এমনসময় খালিদ ভাই ছাদে এসে আমার দিকে এমন ভাবে তাকালেন আমি আস্তে নিচে নেমে গেলাম। আমি পারতপক্ষে উনার সামনে পরতে চাইনা।
ঝিনি আপার দেবর চলে গেলেন। গিয়েই উনি ঝিনি আপাকে ফোন করে বললেন আমাকে বিয়ে করতে চান। ঝিনি আপা তো সাথে সাথে খালাকে জানালেন । আর আমার মতামত জানতে চাইলেন। আমি আগে পিছে চিন্তা না করেই বললাম আমি রাজী। আসলে আমি আর আশ্রিত হয়ে থাকতে চাইনা। আমার নিজের একটা ঠিকানা চাই।
ঝিনি আপা এই বিয়ে নিয়ে খুব উচ্ছ্বসিত। আামারো মন্দ লাগছে না সেদিন সন্ধ্যায় ঝিনি আপা আর আমি গল্প করছিলাম। খালিদ ভাই এসে বললেন, তুলি যা। আমি আপার সাথে কথা বলবো। আমি বের হয়ে গেলাম আপার সাথে উনার কি কথা হলো জানিনা তবে ঝিনি আপা রুম থেকে বের হয়ে খালার কাছে গেলেন।
একটু পর খালা আমাকে ডাকলেন। আমি খালার কাছে যেতেই খালা আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার কপালে চুমু খেয়ে বললেন, আমার মনের আশা পূরন হচ্ছেরে মা। যে কথা কখনো মুখ ফুটে বলতে পারিনি তাই আজ পূরন হচ্ছে। কি আশা খালা”খালিদ তোকে বিয়ে করতে চায়। আমি মনে মনে কতবার ভেবেছি কিন্তু মুখে বলার সাহস পাইনি। আজ খালিদ নিজের মুখে ঝিনি কে বলছে। এ কথা শুনার পর আমার পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে গেলো। খালিদ আমার কাছে এক আতংকের নাম। আমি কিভাবে না আর ভাবতে পারছি না।
এই_গল্পের_নাম_নেই– ১ পর্ব। ইরিনা।
Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।