রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তিন মাস-১ম খন্ড- ২০২১ সাল আমি তখন উত্তরা ৫ এপিবিএনের কোম্পানি কমান্ডার (সহকারী পুলিশ সুপার) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলাম।
২ জুলাই ২০২৪, ৯:১১:৪১
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তিন মাস-১ম খন্ড- ২০২১ সাল আমি তখন উত্তরা ৫ এপিবিএনের কোম্পানি কমান্ডার (সহকারী পুলিশ সুপার) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলাম।
আমাদের অধিনায়ক মহোদয় হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন জনাব মোঃ ফারুক আহমেদ, পুলিশ সুপার। তিনি বর্তমানে সারদা পুলিশ একাডেমিতে পুলিশ সুপার এডমিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ৫ এপিবিএনে তখন আমরা একই ব্যাচের এএসপি বেলাল হোসেন, এএসপি জাফর, এএসপি নাসিম উদ্দিন, এএসপি নুরুল ইসলাম, এএসপি নুরুল আনোয়ার। বিভিন্ন দায়িত্বে সবাই নিয়োজিত ছিল। আমি সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন এন্ড ইন্টেলিজেন্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলাম।
এপিবিএন ইউনিটটা হলো অত্যান্ত সু শৃঙ্খল একটি ডিপার্টমেন্ট। গঠন প্রক্রিয়া সেনাবাহিনীর আদলে। অনেকেই বলে পেরা মিলিটারি ইউনিট। আর্মিদের মতো ছাপ ছাপ লাগানো চক্রাবক্রী ড্রেস। এই ইউনিটটা সরাসরি আইজিপি মহোদয়ের তত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে থাকে। ভিভিআইপি সহ দেশের যেকোনো ক্রাইসিস লগ্নে এই বাহিনীকে দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়। ক্রাইসিস উত্তরণের পর ইউনিটকে আবার নিজ হেডকোয়ার্টার্সে ফিরে আনা হয়। ১৪ এপিবিএন ও ১৬ এপিবিএন যথাক্রমে উখিয়া এবং টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করে।
এভাবে ভালোই দিনকাল কাটছিল। আকস্মিক এপবিবিএন হেডকোয়ার্টার্স থেকে আদেশ আসা শুরু করলো আমাদের সবাইকেই বিশেষ করে বিভাগীয় পদোন্নতি প্রাপ্ত অফিসারদেরকে টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, ভাষানচরে পালাক্রমে ডিউটি করতে হবে। এই আদেশ আসার পর সবার মন খারাপ। সবাই বয়স্ক অফিসার, অনেকের চাকুরির শেষ প্রান্তে। এই বয়েসে অনেকের শারীরিক অবস্থা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। এতদুরে দুর্গম এলাকায় গিয়ে চাকরি করতে হবে। কি আর করার কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মেনে নিতেই হবে। পালাক্রমে প্রথমে ছয় মাসের জন্য ডিপুটেশনে যাওয়া শুরু হলো। এক টার্ম দায়িত্ব পালনের পরে পরবর্তীতে সবদিক বিবেচনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানের মেয়াদকাল তিন মাস করা হয়।
এদিকে ২০২১ সাল করোনা মহামারীতে সারাবিশ্ব কম্পমান। মাঝেমধ্যেই লকডাউন চলছে। অফিস আদালতে যাওয়া সীমিত করে দেয়া হয়েছে। স্কুল কলেজ প্রায়ই বন্ধ থাকছে। ২০২১ সালের কোনো একদিন অফিসে এসে হঠাৎ করে জানতে পারি আমাকে ১৬ ব্যাটালিয়নের (কক্সবাজারের টেকনাফে) অধীনে একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্ব পালন করতে হবে। শুনে মনটা বেশ খারাপ হয়ে গেল। ডিপুটেশনে পোস্টিংয়ের জন্য মন মোটেও খারাপ হয়নি, মনটা খারাপ হয়েছে রোজা রমজান মাস হওয়ার কারণে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাকে আমার রিলিজ করতে হবে তিনিও আমার ব্যাটালিয়নের একজন এডিশনাল এসপি জনাব মোঃ আয়নাল হক। তিনি অল্প কয়েক মাসের ভিতর চাকুরী থেকে অবসরে চলে যাবেন। কি আর করার সারাদেশে কোভিড-১৯ উপলক্ষে লক ডাউন চললেও আমাকে যেতে হবে। লকডাউন এর কারণে সারাদেশে গাড়ি চলাচল বন্ধ আছে। যাতায়াত ব্যাবস্থা ভেংগে পড়েছে। পাবলিক বাস সার্ভিস একেবারেই বন্ধ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাওয়ার আদেশ হাতে পেয়েছি। আমি সিও-৫ ব্যাটালিয়ন স্যারের রুমে বসা থাকাবস্থায় মাননীয় এডিশনাল আইজিপি এপিবিএন হেডকোয়ার্টার্স জনাব মোঃ মোশাররফ হোসেন মহোদয় সিও জনাব ফারুক আহমেদ স্যারকে টেলিফোনে জানিয়ে দিলেন ২/১ দিনের ভিতর যেন ৫ এপিবিএন থেকে একজন অফিসার ওখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সিও স্যার আমাকে বললেন, আপনি আগামী রবিবার অবশ্যই ১৬ এপিবিএন হেডকোয়ার্টার্সে চলে যাবেন এবং সিও ১৬ এপিবিএনের কাছে রিপোর্ট করবেন ও তার নির্দেশনা মোতাবেক দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি আরও বললেন, আমি সরকারি গাড়ির ব্যবস্থা করছি। এই বলেই তিনি ওসি এমটিকে ডেকে বলে দিলেন সরকারি ডাবল কেবিন পিকআপ যেন আমাকে ১৬ ব্যাটেলিয়ন, টেকনাফের হেডকোয়ার্টারে পৌঁছে দেয়।
রবিবার ১৭/০৪/২০২১ ইং তারিখ সকাল ১১ টায় ডাবল কেবিন এসে পৌঁছে যায় বাসায়। তিন মাস থাকার মতো প্রয়োজনীয় মালামাল উঠিয়ে নিলাম গাড়িতে। রমজান মাস শুরু হয়েছে। রমজান মাসে পরিবার ছেড়ে নুতন জায়গায় যাব, এনিয়ে স্ত্রী, পুত্র, কন্যার ভিষণ মন খারাপ। তারা আমার সাথে ঠিক মতো কথা বলতে পারছিল না। তাদেরকে বললাম, দেখো সবকিছুই আল্লাহর হুকুমেই হয়। আল্লাহ আমার রিজিক কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এলাকায় বরাদ্দ রেখেছেন। তাই সেই রিজিক খাওয়ার জন্য হলেও আমাকে যেতে হবে। এটাই বিধির বিধান। মুসলমান হলে এটা মেনে নিতেই হবে। এভাবেই ব্যাখ্যা করেছিলাম পরিবারের কাছে। তাতে তাদের মনটা কিছুটা হলেও হালকা হয়ে গিয়েছিল।
যথারীতি সকাল ১১.৩০ ঘটিকায় রওনা দিয়ে দিলাম। গাড়ি ছুটে চললো কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। আমার জীবনে আমি কোথাও নিজে থেকে পোস্টিং নিতে যাইনি। এটা ছিল আমার অপছন্দীয় কাজগুলোর ভিতর অন্যতম। কতৃপক্ষ যখন যেখানেই পাঠিয়ে দিয়েছেন আমি সন্তষ্ট চিত্রে সেখানেই চোখ মুখ বুজে চলে গেছি। জীবনে এই নিয়মের একবার ব্যাতিক্রম করেছিলাম। তাই সেখানে ভাল থাকতে পারিনি। আমার যখন ২০১০ সালে সিরাজগঞ্জে পোস্টিং হয়েছিল তখন আমার ব্যাচমেট হানিফুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের বগংবন্ধু পশ্চিম থানার ওসি ছিল। আমার পোস্টিং অর্ডার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ভায়া রাজশাহী রেঞ্জ অফিসের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ জেলায় পৌঁছে গেলে বন্ধু তা জানতে পারে। ওদিকে হানিফুল ইসলামকে সেখানকার লোকাল এমপি /মন্ত্রী ঐ থানায় রাখতে চায় না। হয়তো তাদের রাজনৈতিক কোন কাজ সে করে দিতে পারেনি তাই হয়তো ওর উপর গোস্বা। তাকে বিদায় করে দেওয়ার জন্য এবং নুতন ওসি পদায়নের নিমিত্তে মন্ত্রী মহোদয় পুলিশ সুপারকে বলে দিয়েছিলেন।
ব্যাচমেট হানিফুল ইসলামের চিন্তাধারা হলো, তার পরিবর্তে যেন আমিই সেই থানায় তার কর্মস্থলে যাই এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব নিই। তাই সে আমাকে মোবাইলে করে চাপাচাপি শুরু করে দেয়, যেন আমি মন্ত্রীর কাছে তদবির করে ওখানে যাই। মন্ত্রী মহোদয় আমার পুর্ব পরিচিত। তবুও তাকে বললাম বন্ধু আমি তদবির করে কোথাও যেতে চাইনা। আমার জানামতে ঐ জেলায় সর্বহারা পার্টি কবলিত সবচেয়ে খারাপ থানা তাড়াশের ওসির পদ শুন্য হয়ে আছে। আমি ওকে বললাম কেউ খারাপ জায়গায় যেতে চায় না। আমি যেতে চাই এবং আমি পুলিশ সুপার মহোদয়কে বলে সেখানেই যাব ইনশাআল্লাহ। একথা শুনার পরে বন্ধু আমার সাথে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে জানালো তোমাকে এখানেই আসতে হবে। অলরেডি সে না-কি আমার ব্যাপারে পুলিশ সুপার মহোদয়কে বলে রেখেছে। এসপি মহোদয়ও রাজি। তবে মন্ত্রীর সুপারিশ ছাড়া কাজ হবে না। অনেক পীড়াপীড়ি, চাপাচাপির পর অগত্যা আমাকে রাজি হতেই হলো।
মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করলাম। মন্ত্রী মহোদয় এসপি মহোদয়কে বলেও দিলেন। আমি জেলায় জয়েন করার পর পুলিশ সুপার মহোদয় ঐ থানায় আমাকে বদলী করে দেন। যথারীতি বন্ধু আমাকে থানার চার্জ দিয়ে সে পাবনা জেলায় আটঘরিয়া থানায় যোগদান করলো। আগেই বলেছিলাম, নিজ ইচ্ছায় কোথাও গেলে আমি সেখানে ভাল থাকতে পারিনা। তাই মাত্র সাত মাসের মাথায় জানিনা কি কারণে আমাকে না জানিয়েই পুলিশ সুপার মহোদয় আমাকে আকস্মিক ভাবে সিরাজগঞ্জের সদর থানায় বদলী করে দিলেন।
আমার মনে হয়েছিল হয়তো আমার কাজকর্ম উনার পছন্দ হয়নি অথবা আমি উনার মন মতো চলতে পারিনি। আমার এ বদলী আমি ঘুর্নাক্ষরেও টের পাইনি। সিরাজগঞ্জ সদর থানাতেও ভাল থাকতে পারিনি। মন ভাল করার জন্য ২০১১ সালে চলে গিয়েছিলাম ওমরা হজ্বে। ফিরে এসে পুলিশ সুপার মহোদয়কে বারবার অনুরোধ করলাম। স্যার আমাকে অন্য কোথাও দেন, সদর থানায় আমি থাকতে চাইনা রাজনৈতিক কারণে। খারাপ জায়গায় হলেও চলবে। পুলিশ সুপার মহোদয় আমার উপর অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। তিনি আমার অজান্তে ডিআইজি রাজশাহী রেঞ্জ মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করে আমাকে পাবনা জেলায় বদলী করে দেন। আমার পরিবর্তে তিনি উনার পছন্দের আমার আরেক ব্যাচমেট মোঃ শহিদুল ইসলামকে পোস্টিং করে নিয়ে আসেন। মনটা আবারও খারাপ হয়ে গেল।
সিদ্ধান্ত নিলাম চাকুরীজীবনে আর ওসির দায়িত্ব গ্রহণ করবো না। কারন এই পদটি আমার জন্য বেদনাদায়ক এক পদ। ২০১১ শেষের দিক থেকে একেবারেই আর ঐ পদে যাইনি বা যাবার চেষ্টাও করিনি। এরপর থেকে ডিবি, কোর্ট, ট্রেনিং সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর এমন কম গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকুরী করতে থাকলাম।
২০১৭ সালের ২৬ শে জানুয়ারিতে পদন্নোতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হলাম। পোস্টিং হলো ২এপিবিএন, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহে। চলে গেলাম সেখানে। ছিলাম দীর্ঘ ৩ বছর ৭ মাস ২১ দিন। এরপরে ৫এপিবিন, উত্তরা, ঢাকায়। মাত্র কয়েকমাস যাবার পরে আবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডিপুটেশনে অর্ডার প্রাপ্তি। বিনা বাক্য ব্যয়ে চলে এলাম রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। কারো কাছেই বলিনি আমার পারিবারিক কয়েকটি সমস্যা চলছে।
মায়ের মেজর অপারেশন হবে, ছেলের এডমিশন টেষ্টের ব্যাপার সহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা ছিল। বলিনি এই কারণে যে, আমি জানি বললেও কেউ আমার কথা বিশ্বাস করবেনা এবং ডিপার্টমেন্টও আমাকে করুণা দেখাবেনা। হয়তো ভাববে আমি অজুহাত দাড় করাচ্ছি। তাই আর নিজের সমস্যা তুলে না ধরেই সকল সমস্যা মহান আল্লাহর কাছে সমর্পণ করে চলে আসাটাকেই প্রাধান্য দিয়েছি।
লক ডাউনে রোজা রেখেই গন্তব্যে দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। যখন আমাদের ডাবল কেবিন পিকআপ চট্টগ্রাম মেট্রো এলাকায় পৌছিল তখন চট্রগ্রাম মেট্রোর কিছু স্মৃতি আমার মানসপটে ভেসে ওঠে। সেসব নিয়ে ড্রাইভার, অর্ডারলীর সাথে শেয়ার করে মনটা চাংগা করে নিলাম। চট্রগ্রাম মেট্রোর সীমানা ছাড়িয়ে কক্সবাজার রোডে চলতে চলতে চকোরিয়া পৌঁছে দেখলাম ইফতারের সময় প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। গাড়ি থামিয়ে তিন জনের ইফতার সামগ্রী, পানি কিনে নিলাম চকোরিয়া বাজার থেকে। ড্রাইভারকে বললাম, নির্জন একটা পরিবেশ দেখে গাড়ি থামাবেন। আজ প্রকৃতির মাঝে আমি ইফতার করে ধন্য হতে চাই। ঠিক সময় মতোই ড্রাইভার সাহেব লোকালয় থেকে দূরে কোলাহল মুক্ত একটা নির্জন পরিবেশ দেখে গাড়ি থামিয়ে দিল। বললো, স্যার জায়গাটা পছন্দ হয়? বললাম, বেশ তো! চলবে, চলেন নামা যাক।
ড্রাইভার, অর্ডারলী মিলে পিয়াজু, বেগুনি, চপ, জিলাপি, মুড়ি ইত্যাদি ভেংগে একত্র করে মিশিয়ে মজাদার ইফতার রেডি করে ফেললো। আমরা সবুজ ঘাসের উপর বসে পড়লাম। আশেপাশে আযানের শব্দ কানে আসতেই ইফতার শুরু করে দিলাম। ইফতার শেষে সবুজ ঘাসকে জায়নামাজ বানিয়ে মাগরিবের নামায আদায় করে নিলাম। নামায শেষে তিন জনের জন্য নেয়া তিন বাটি কেনা ফিরনি দিয়ে মুখ মিষ্টি করে নিলাম। এরপরে আবার জার্নি।
রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে কক্সবাজার শহরে প্রবেশ করতেই ড্রাইভার, অর্ডারলী বললো, স্যার জীবনে কক্সবাজারে আসা হয়ে উঠেনি। সমুদ্র দেখতে চাই। ওদের নিয়ে সরাসরি কলাতলী সী বীচে চলে গেলাম। গাড়ি থেকে নেমে তিনজন একত্রে জোছনা মাখা আলোতে সমুদ্রের দিকে এগিয়ে গেলাম। একেবারেই কাছে। জোছনা রাতের অন্ধকারে সমুদ্রের ঢেউ ছলাৎ ছলাৎ করে গর্জন করে পাড়ে এসে আঘাত করছে। সাগরের ঢেউয়ের মাথায় থাকা জলরাশি রুপোর মতো ঝিকিমিকি করছে। সাগরের বিশালতার কাছে নিজে অতি তুচ্ছ মনে হলো। মুহুর্তের মধ্যে মনটা চাংগা হয়ে গেল। প্রানে যেন নুতন সুর বেজে উঠলো। আহা আল্লাহর কি অপরুপ সৃষ্টি যা কি-না মুহুর্তের মধ্যে মানুষের মনকে ভাল করে দেয়। সমুদ্রের পাড়ের শীতল হাওয়ার পরশ দেহ মনকে সতেজ করে তুললো।
বেশ কিছুক্ষণ সময় ক্ষেপণ করে প্রশান্ত মন নিয়ে সমুদ্রের পাড় থেকেই বাসায় রিং দিলাম। সমুদ্রের গর্জন শোনালাম বড় মেয়েকে। মেয়ে নাতিনাতনিদের নিয়ে ব্যাস্ত থাকলেও বাবার অনুরোধে মোবাইলে সমুদ্রের গর্জন শুনলো। তাকে মনে করিয়ে দিলাম ২০০৮ সালে যখন তুমি ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজের ছাত্রী ছিলে তখন তোমাদের তিন ভাইবোনকে নিয়ে সমুদ্র সৈকতে এসেছিলাম এবং সমুদ্রের লোনা পানিতে আমরা অবগাহন করেছিলাম।— চলবে।
Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।