দরবেশ সেজে প্রতারনা।
গ্রেফতারকৃতরা কেউ মসজিদে নববীর ইমাম, কেউ আধ্যাত্মিক নেতা, কেউ পীরে কেবলা, কেউ দরবেশ বাবা আবার কেউ জ্বিনের বাদশা। প্রত্যেকের নামেই একাধিক ফেসবুক পেইজ এবং আইডি রয়েছে।
লটারি পাইয়ে দেওয়া, ভাগ্যবদল, পাওনা টাকা আদায়, মামলায় জেতানো, অর্থ সংকট দূরসহ সব সমস্যা সমাধানে পারঙ্গম তারা। আধ্যাত্মিক ও তান্ত্রিক ক্ষমতাবলে বিপদগ্রস্ত মানুষের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিমিষেই বলে দিতে পারে।
দরবেশ এবং জ্বিনের বাদশা প্রতারক চক্রের এ সদস্যরা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে দুই কৌশলে। এক. গণমাধ্যম ও সামাজিক।
যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রলুব্ধ করা হয়। ফেসবুকের সেই পোস্ট করে বুস্টার করে হাজার হাজার মানুষের কাছে পৌঁছানো হয়।
এরপর বিজ্ঞাপনে থাকা মোবাইল ফোন নম্বরে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি যোগাযোগ করলে শুরু হয় পকেট কাটা।
দুই. প্রতারক চক্রের সদস্যরা নিজে থেকেই মানুষের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে গভীর রাতে কিংবা ভোরে মানুষকে ফোন করে জিনের বাদশা কিংবা দরবেশ হিসেবে পরিচয় দেয়। ধনসম্পত্তির জটিলতা, সংসারে অশান্তি দূর করাসহ সব মুশকিল আসানের টোপ দেয় তারা। টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে কখনও কখনও কথা বলে নারী বা ক্ষীণ কণ্ঠে।
কাউকে ফাঁদে ফেলতে পারলে চক্রের সদস্যরা প্রথমে শুরু করে হাজার টাকা দিয়ে। পরে ধাপে ধাপে নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়।
গত বছর আগস্ট মাসে আমেনা খান নামে এক এমবিবিএস ডাক্তারের সাথে পরিচয় হয় ভন্ড এক দরবেশের ।
পারিবারিক সমস্যায় থাকা ঐ চিকিৎসক সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে দারস্থ হন ভন্ড দরবেশের কাছে। সমস্যা সমাধানের কথা বলে ভুক্তভোগী নারীর কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন ভন্ড দরবেশ।
এই প্রতারক চক্র কে ধরতে মাঠে নামে সিআইডির সাইবার ইউনিট। সাইবার টিম এক পর্যায়ে গতকাল চক্রের মূলহোতা আশিকুর রহমানকে মাগুরা জেলা থেকে গ্রেফতার করে স। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কেরানীগঞ্জ থেকে এই চক্রের আরও ২০ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা সকলেই ভোলা জেলার অধিবাসী। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে তারা ঢাকার কেরানীগঞ্জে কয়েকটি বাসা ভাড়া করে এই প্রতারণা কাজ করে আসতেছিল।
Cumillar Voice’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।